রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখার্জির ৩১টি জীবনবীমা পলিসির বার্ষিক প্রিমিয়াম ১.৫ কোটি টাকা। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সূত্রে একথা জানা গেছে। বহু কোটি টাকার পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (ডব্লিউবিএসএসসি) কেলেঙ্কারিতে বর্তমানে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখার্জি দুজনেই জেলে আছেন।
সোমবার একটি বিশেষ ইডি আদালতে জমা দেওয়া প্রথম চার্জশিটে তদন্ত সংস্থার এই তথ্য সামনে এনেছে। এছাড়াও ওই চার্জশীটে জানানো হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজেই এই জীবন বীমা পলিসির বেশিরভাগের নমিনি।
ইডি-র তথ্য অনুসারে কেন্দ্রীয় এজেন্সির উদ্ধারকৃত ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টের রেকর্ড অনুসারে প্রাক্তন রাজ্য শিক্ষামন্ত্রীর বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে এই বিশাল অঙ্কের প্রিমিয়াম দেওয়া হত। এই সমস্ত পলিসিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের কাকা হিসেবে দেখানো হয়েছে।
এক ইডি আধিকারিক জানিয়েছেন, "বীমা পলিসিগুলির সম্পূর্ণ ক্রম এবং তাদের প্রিমিয়াম জমার প্রক্রিয়াটি কিছু অংশের দ্বারা তোলা যুক্তিকে বাতিল করার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ যে পার্থ চ্যাটার্জি এবং অর্পিতা মুখার্জি নিছক পরিচিত ছিলেন৷ এই জীবন বীমা পলিসিগুলিই দুজনের মধ্যে দৃঢ় ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ।"
এই পলিসিগুলি ছাড়াও, পার্থ চ্যাটার্জি এবং অর্পিতা মুখার্জির যৌথ মালিকানাধীন অন্য কিছু জমির সম্পত্তিও কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্তকারীদের কাছে এই দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রমাণের জন্য কাজে আসবে বলে ওই আধিকারিক উল্লেখ করেছেন।
চার্জশিটে, ইডি মোট আটজনের নাম দিয়েছে। যার মধ্যে আছে পার্থ চ্যাটার্জী, অর্পিতা মুখার্জি এবং শেল কোম্পানির ছয়জন ডিরেক্টর। অভিযোগ, কেলেঙ্কারির অর্থ বিভিন্ন চ্যানেলে পাঠানোর উদ্দেশ্যে এই সমস্ত শেল কোম্পানী তৈরি হয়েছিল।
এছাড়াও তদন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে পার্থ চ্যাটার্জি এবং অর্পিতা মুখার্জির কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত ১০৩.১০ কোটি টাকার সম্পদের কথা উল্লেখ করেছে।
ইডি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সম্পত্তিগুলির মধ্যে রয়েছে নগদ ৪৯.৮০ কোটি টাকা এবং ৫.০৮ কোটি টাকার সোনার গয়না, যা জুলাই মাসে কলকাতায় মুখার্জির দুটি বাসভবন থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়।
অবশিষ্ট অর্থ ব্যাংক আমানত, জমি ও বাসস্থানের আকারে সম্পত্তি এবং বেশ কয়েকটি কোম্পানিতে বিনিয়োগের মতো অন্যান্য স্থাবর সম্পদের আকারে আছে। এই কেলেঙ্কারির প্রধান অভিযুক্ত হিসাবে পার্থ চ্যাটার্জি এবং অর্পিতা মুখার্জীর নাম দেওয়া হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন