‘ব্যতিক্রমী’ পথে চাকরিপ্রাপ্তদের স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিতে বললেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অন্যথায় তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। বুধবার রাজ্যের স্কুল দপ্তরে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিনব এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে হাইকোর্ট।
বুধবার স্কুলশিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মচারীদের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ অনুসারে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থী কিছু না লিখেও নম্বর পেয়েছেন এবং নিয়োগপত্র পেয়েছেন। গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-তেও একইরকমভাবে নম্বরের হেরফের হয়েছে।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যারা বেআইনি পথে চাকরি পেয়েছেন এবং চাকরি করছেন তাঁদের নিজে থেকে ইস্তফা দিতে হবে। আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে তাঁদের ইস্তফা দিতে হবে। নাহলে তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। এমনকি নিজে থেকে ইস্তফা না দিলে আদালত নির্দেশ দেবে যাতে আগামীতে তাঁরা কোনও সরকারি চাকরিতে যোগ না দিতে পারেন। আদালতের নির্দেশক্রমে আগামী ৩ অক্টোবর এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে বৈঠক করতে হবে। সেখানেই কতজনের বেআইনি নিয়োগ হয়েছে তা জানাতে হবে। আদালতের এই নির্দেশ এসএসসি-র ওয়েবসাইট এবং সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
সূত্র অনুসারে, সাদা খাতা জমা দিয়ে অথবা মাত্র একটি দুটি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষকতা এবং গ্রুপ সি ও ডি-তে নিযুক্ত হয়েছেন কমপক্ষে ৮ হাজার জন। সিবিআই রিপোর্টের ভিত্তিতে তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এঁদের প্রায় সকলের ক্ষেত্রেই ওএমআর শিটে জালিয়াতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
এসএসসি দুর্নীতি কান্ডে এদিনই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ফরেনসিক রিপোর্ট জমা করে সিবিআই। সূত্র অনুসারে, একাধিক ক্ষেত্রে নম্বরের ফারাক পাওয়া গেছে এবং দাবি করা হয়েছে এ সমস্তই ঘটেছে সুবীরেশ ভট্টাচার্য চেয়ারম্যান থাকাকালীন।
যদিও এই বিষয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন সুর শোনা গেছে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গলায়। এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, অতীতে গোলমাল করেও যদি কেউ চাকরি পান আমরা সেটা রক্ষা করতে চাই। যা নিয়ে বিতর্ক আছে, সমস্যা আছে, আমরা সেই চাকরিও রক্ষা করতে চাই। একইসঙ্গে চাই যোগ্যরাও যেন বঞ্চিত না হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন