ভুয়ো নথির বিনিময়ে চাকরি মামলায় আদালতের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়লো সিআইডি। রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, কাজ না করলে ফল ভুগতে হবে। পাশাপাশি মামলাটি সিবিআইকে দেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন বিচারপতি।
বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে। শুনানি চলাকালীন সিআইডির কাজের গতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি বসু। তিনি বলেন, "আপনাদের ওপর ভরসা করে মামলাটি সিবিআইকে দিইনি। কিন্তু আপনারাই কাজের অগ্রগতি দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। কাজ করুন। কাজ না করলে এর ফল ভুগতে হবে। মামলা কিন্তু সিবিআইকে দিতে বাধ্য হবো।"
এদিন সিআইডির আইনজীবীর কাছে তিনি জানতে চান, এই মামলায় সিআইডির তদন্তকারী অফিসার কেন অন্য মামলায় নিযুক্ত হবেন? কেন তাঁকে গঙ্গারামপুরে কাজে পাঠানো হবে? মামলার গুরুত্বপূর্ণ দিনে কেন সিআইডি-র আধিকারিক হাইকোর্টে উপস্থিত থাকবেন না? কোন আধিকারিক এই মামলা দেখছেন তার বিস্তারিত তথ্য এখনও হাইকোর্টে জমা পড়েনি।
সিআইডি-র আইনজীবীর দাবি, কোন কোন পদমর্যাদার আধিকারিককে নিযুক্ত করা হয়েছে তার উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন সাত আধিকারিক উপস্থিত থাকবেন। বিচারপতি বসু আগামী ১৭ অগাস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
প্রসঙ্গত, অভিযোগ ওঠে, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার একটি স্কুলে ভূগোলের শিক্ষক হিসেবে চাকরি পেয়েছিলেন অরবিন্দ মাইতি নামের একজন। তাঁর মেমো নম্বর নকল করেই অনিমেষ তিওয়ারি চাকরি পান। এই অনিমেষের বাবা মুর্শিদাবাদের সুতি ১ নম্বর ব্লকের গোথা এ রহমান হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। সোমা রায় নামে এক মহিলা এই ঘটনায় মামলা করেন।
এরপরেই বিচারপতি নির্দেশ দেন ২০১৬ সালের পর থেকে যত নিয়োগ হয়েছে, সব শিক্ষকের তথ্য যাচাই করার। স্কুল পরিদর্শকরা হলফনামা পেশ করে। যা খতিয়ে দেখে ৩৬ জন ভুয়ো শিক্ষকের নাম জানতে পারে এসএসসি। এদের মধ্যে ১৮ জন ভুয়ো নথি দেখিয়ে চাকরি পেয়েছেন। ১১ জনের নথিই পাওয়া যায়নি এবং ৭ জনের মেধাতালিকায় স্থান পরিবর্তন করে চাকরি পেয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন