স্কুল সার্ভিস নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সিবিআই-র হাতে গ্রেফতার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। টানা ছয় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসএসকেএম হাসপাতালে মেডিকেল টেস্টের পর আগামীকাল তাঁকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হবে বলে জানা গেছে। প্রায় ১০ বছর পর্ষদ সভাপতির পদে ছিলেন কল্যাণময়।
সূত্রের খবর, গতকাল(বুধবার) কল্যাণময়কে হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিশ পাঠায় সিবিআই। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বেলা ১২টা নাগাদ বৃহস্পতিবার নথিপত্র সমেত সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দেন তিনি। গোয়েন্দা আধিকারিকদের দাবি, কল্যাণময় গাঙ্গুলির বয়ানে একাধিক অসংগতি মিলেছে। বেশিরভাগ নথি জমা দিতে পারেননি তিনি। হারিয়ে গেছে বলে জানান। শুধু তাই নয়, একাধিক প্রশ্নের উত্তরও জানেন না বলে এড়িয়ে গেছেন বলে অভিযোগ। সেই কারণেই গ্রেফতার করা হয়েছে প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতিকে।
সিবিআই সূত্রের খবর, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কল্যাণময়ের বিরুদ্ধে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতির হদিশ মিলেছে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন উপদেষ্টা এস পি সিনহাকে। তাঁর সাথে প্রত্যক্ষভাবে যোগাযোগ ছিল কল্যাণময়ের বলে অভিযোগ। হাইকোর্টের বাগ কমিটির রিপোর্টে একাধিক জায়গায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সমস্ত রকম ভুয়ো নিয়োগপত্রে তাঁর সই আছে। শুধু শিক্ষক নয়, বেআইনিভাবে শিক্ষাকর্মী নিয়োগেও তাঁর ভূমিকা আছে বলে দাবি করা হয়েছে।
এছাড়াও, টানা ছয় ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও সুপারিশ এলে তা কীভাবে এবং কোথা থেকে আসত, কারা নির্দেশ দিতেন এই ধরণের প্রশ্ন করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। যদিও এই সব প্রশ্নগুলোই তিনি এড়িয়ে গেছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একাধিকবার শিরোনামে উঠে এসেছে প্রাক্তন সভাপতির নাম। প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতাকেও চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল কল্যাণময়ের বিরুদ্ধে। এক মাস আগেই তাঁর বাড়িতে টানা ১০ ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় একাধিকবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। বাগ কমিটির রিপোর্টে কল্যাণময়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার কথাও উল্লেখ ছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন