রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা সমস্ত সরকারি স্কুলগুলিতে অবৈধভাবে যাদের নিয়োগ করা হয়েছিল, সেইসব শিক্ষকদের অবিলম্বে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পদত্যাগের নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হচ্ছে সোমবার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত একটি পদত্যাগ পত্রও পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (ডব্লিউবিএসএসসি)-র অফিসে পৌঁছায়নি।
রাজ্য শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, গত ৪ নভেম্বর শুক্রবার কমিশনের অফিস বন্ধ হওয়ার সময় পর্যন্ত সেখান থেকে ডাক বা ইমেলের মাধ্যমে কোনও পদত্যাগপত্র পাওয়া যায়নি। শনিবার এবং রবিবার কমিশনের অফিস বন্ধ থাকায় হিসেব অনুযায়ী পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন হচ্ছে সোমবার। সময়সীমা শেষ হওয়ার পর কমিশনের কৌঁসুলি পরবর্তী শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে এই বিষয়টি জানাবেন বলেই সূত্রের খবর।
গত সেপ্টেম্বর মাসে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বেআইনিভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের উপর একটি নির্দেশিকা জারি করেন। নির্দেশিকায় স্পষ্টভাবে জানানো হয়, ৭ নভেম্বরের মধ্যে অযোগ্য প্রার্থীদের WBSSC অফিসে স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে। তারপর সেই পদগুলি শূন্যপদ হিসেবে বিবেচিত হবে। সেই অনুযায়ী কমিশন নিজস্ব সার্ভারে এই শূন্যপদগুলি সম্পর্কে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করবে।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আরও জানান, যারা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। আর যারা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন না, তারা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভবিষ্যতের সমস্ত সরকারী পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল বিধায়ক এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এবং আরও কয়েকজন শীর্ষ আধিকারিক।
গত সপ্তাহে মামলার শুনানি চলাকালীন আদালতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বিষ্ময় প্রকাশ করে তিনি জানান - মাঝে মাঝে তিনি ভাবতে থাকেন, শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির পিছনে থাকা আসল মাস্টারমাইন্ড তাঁর জীবদ্দশায় আদৌ ধরা পড়বে কিনা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন