শুক্রবারই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি বাতিল হয়েছে ৮৪২ জন গ্রুপ সি কর্মীর। সূত্রের খবর, এই তালিকায় নাম রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভাইঝিরও! এছাড়াও বিজেপি নেতার মেয়ে ও এক তৃণমূল কাউন্সিলরের নামও ওই তালিকায় পাওয়া গেছে।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এর আগে প্রাথমিক থেকে শুরু করে নবম-দশম, গ্রুপ ডি সব ক্ষেত্রেই বেআইনি নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এবার গ্রুপ সি পদে ৮৪২ জনের চাকরি বাতিল করেছে হাইকোর্ট। এই তালিকায় রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মামাতো দাদার মেয়ে বৃষ্টি মুখার্জি। তাঁর বাড়ি বীরভূমের কুশুম্বা গ্রামে। তিনি বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গ্রুপ সি পদে চাকরি পেয়েছিলেন।
বৃষ্টির পরিবারের সূত্রে খবর, দু'বছর আগে চাকরি পেলেও প্রথম কয়েকদিন যাওয়ার পর আর ওই স্কুলে যাননি তিনি। শারীরিক অসুস্থতার কারণেই তিনি যেতেন না। বেতনও নাকি গ্রহণ করেননি বৃষ্টি মুখার্জি।
বৃষ্টি মুখার্জির বাবা নীহার মুখার্জি বলেন, বর্তমানে আমার মেয়ে কলকাতায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। ওর নাম কেন এসেছে বলতে পারবো না।
তালিকায় নাম রয়েছে খোকন মাহাতোর। তিনি লালগড়ের বইতা হাইস্কুলের গ্রুপ সি কর্মী। খোকন মাহাতো মন্ত্রী তথা শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোর ভাই। মন্ত্রী স্বীকার করে নিয়েছেন, চাকরি বাতিলের তালিকায় তাঁর ভাইয়ের নাম রয়েছে।
চাকরি বাতিল হয়েছে মন্দিরবাজারের তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার সভাপতি জয়দেব হালদারের ছেলে সুদীপ হালদারের। তালিকা প্রকাশের পর বাবা বা ছেলে কারও সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।
চাকরি বাতিল হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মিনাখার বিধায়ক ঊষারানি মণ্ডলের মেয়ে বিনতা মণ্ডলের। তালিকায় ১৪১ নম্বরে নাম রয়েছে তাঁর। রোল নম্বর - ৫৬০৮১৬১৯১২৭০০০। নন্দননগর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন তজায়ন
আবার ওই একই তালিকায় নাম রয়েছে ডায়মন্ড হারবারের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমিত সাহার। জেলার টিএমসিপি নেতা তিনি। হটুগঞ্জ গার্লস হাইস্কুলে কর্মরত তিনি। স্থানীয় সূত্রে খবর, নাম প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই পাড়াতে দেখা যাচ্ছে না অমিত সাহাকে।
কোচবিহার মাথাভাঙা ২ নম্বর ব্লকের যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মদন বর্মনের নামও রয়েছে চাকরি বাতিলের তালিকায়। তিনি বলেন, যে ওএমআর শিট দেখানো হয়েছে সেটা আমার নয়। এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবো আমি।
আবার তালিকাতে রয়েছে বিজেপি নেতা মেয়ের নামও। প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বরের মেয়ে বৈশাখী বরের নাম রয়েছে চাকরি বাতিলের তালিকায়। ২০১৬ সালে কংগ্রেসের টিকিটে বাগদা বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী উপেন বিশ্বাসকে পরাজিত করেছিলেন দুলাল বর। পরে যোগ দেন বিজেপিতে। তাঁর দাবি, মেয়ের চাকরির ব্যাপারে কিছুই জানেন না তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন