শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিবিআই-র হাতে গ্রেফতার হন এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও হিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য। এবার তাঁর বিরুদ্ধে চাকরিপ্রার্থীদের মার্কশিটের নম্বর অদলবদল করার অভিযোগ আনল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)।
সোমবার, আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে এই মামলার শুনানি ছিল। শুনানি চলাকালীন বিষ্ফোরক অভিযোগ তুলে সুবীরেশের জেল হেফাজতের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানান সিবিআই-র আইনজীবী। আদালতের সওয়ালে আইনজীবী জানান, স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সিবিআই-র হাতে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি এসেছে। তাই সেবিষয়ে আরও তদন্ত করা প্রয়োজন।
সেইসব নথিপত্র ইতিমধ্যেই আদালতে পেশ করা হয়েছে। সিবিআই-র দাবি, সুবীরেশের জামিন হয়ে গেলে তিনি সেইসব তথ্যপ্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করবেন। গোটা ঘটনাটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দা আধিকারিকরা।
সিবিআই-র এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভ্রান্ত বলে পাল্টা দাবি করেন সুবীরেশের আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায়। তাঁর মতে, সুবীরেশ অসুস্থ। তাঁর ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। বয়স এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার বিচারে তাঁকে জামিন দেওয়া উচিত। তিনি জেলের খাবার খেতে পারছেন না। তাঁকে অবিলম্বে 'ডায়েট চার্ট' মেনে চলার অনুমতি দিক আদালত।
সিবিআই-কে তীব্র কটাক্ষ করে তমাল বলেন, ওরা (সিবিআই) দুটো শব্দ বেশ ভাল রপ্ত করেছে। ‘প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব’ আর ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’। এই দুটো কথা প্রথম থেকেই শুনেই আসছি সিবিআইয়ের কাছ থেকে। হেফাজতে থাকাকালীন কেউ কীভাবে প্রমাণ লোপাট করতে পারে! বাইরে থাকাকালীন হয়ত করতে পারলেও, জেলের ভিতর থেকে কাউকে কীভাবে প্রভাবিত করবেন?
প্রসঙ্গত, স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পর ১৯ সেপ্টেম্বর বাঁশদ্রোণীর ফ্ল্যাট থেকে সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। তদন্তে সম্পূর্ণ অসহযোগিতার কারণেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি সিবিআই-র। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, এস পি সিনহা, অশোক সাহা, কল্যাণময় গাঙ্গুলীর পর এই প্রথম কোনও উপাচার্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন