এসএসকেএম হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ের ভুল চিকিৎসা করা হয়েছে। যে কারণে তাঁর পায়ে বাড়াবাড়ি রকমের সংক্রমণ হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এমন দাবি করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যে রীতিমতো ক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা।
অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, পশ্চিমবঙ্গ-র বক্তব্য, খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেই যদি তাঁর অন্যতম উৎকর্ষ হাসপাতালের প্রতি যদি আস্থা না রাখতে পারেন, তাহলে সাধারণ গরীব মানুষের কী হোবে, কোথায় চিকিৎসা করাতে যাবে?
সেপ্টেম্বর মাসে স্পেন সফরে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে ফিরে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পর এক মাসের বেশি সময় ধরে বাড়িতে বিশ্রামে ছিলেন তিনি। গত ২৭ অক্টোবর বাড়ি থেকে বের হন তিনি। বুধবার নবান্নে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমার ১০-১২ দিন আইভি ইঞ্জেকশন চলেছে। কারণ ভুল ট্রিটমেন্টের জন্য আমার পায়ের ইনফেকশনটা সেপটিকের মতো হয়ে গিয়েছিল। যেভাবে স্যালাইন দেওয়ার জন্য চ্যানেল করা হয়, সেভাবে আমার হাতেও চ্যানেল করা ছিল।“
মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের চিকিৎসা মহল। অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, পশ্চিমবঙ্গ-র সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মানস গুমটা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, আমরা আগেই বলেছিলাম স্বাস্থ্য দপ্তর নয়, এখন সার্কাস দপ্তর চলছে। আমরা বলেছিলাম পচে গেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। পরিস্থিতি এমনই যে কয়েকদিন আগে এক প্রাক্তন মন্ত্রীকে গভীর রাতে দৌড়ে আসতে হয়েছিল গুরুতর অসুস্থ এক স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য বেডের ব্যবস্থা করতে। এর থেকে অনুমান করা যায় পরিস্থিতি। এখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর মুখ থেকেও একই কথা শোনা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য বিপজ্জনক। সাধারণ গরীব মানুষরা এতে দিশেহারা হয়ে পড়বেন। তারা ঘটি বাটি বেচে বেসরকারি হাসপাতালের দ্বারস্থ হবেন।
মমতার এই মন্তব্যে রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘এটাই হল রাজ্যের সেরার সেরা হাসপাতালের শ্রেষ্ঠতম বিজ্ঞাপন।’’ বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ আবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে শোকজ করার দাবি তুলেছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন