উপাচার্য নিয়োগ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার আদালত রায় দেয়, উপাচার্য নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগের কোনো ক্ষমতাই রাজ্য সরকারের নেই।
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষমতা একমাত্র আচার্যের হাতে। আর আচার্য হচ্ছেন রাজ্যের রাজ্যপাল। রাজ্য সরকার এ বিষয়ে কোনোরকম হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। রাজ্য যদি উপাচার্য নিয়োগ করে থাকে তাহলে সেগুলি অবৈধ। সেই সমস্ত উপচার্য পদ খারিজেরও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
তবে সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনার মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যদের পুনরায় নিয়োগে সম্মতি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তবে সেই নিয়োগ আচার্য করায় তা বাতিল করা হবে না। তবে সেক্ষেত্রেও একাধিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। এছাড়া মনে করা হচ্ছে, ২০১৮ সালের ইউজিসি-র নির্দেশিকা অনুযায়ী যে সকল উপাচার্যকে নিয়োগ করা হয়নি তাঁদের পদ খারিজ হয়ে যেতে পারে।
উল্লেখ্য, উপাচার্যদের নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ এনে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন অনুপম বেরা নামের এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ ছিল, যাদবপুর, রবীন্দ্রভারতী, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সহ মোট ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধ নিয়োগ করেছে রাজ্য। তার আগে তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করে অবৈধ উপাচার্য নিয়োগের অভিযোগ করেছিলেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তীর পুনর্নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বাতিল করেছিল। আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছিল, সোনালি চক্রবর্তীকে পুনরায় নিয়োগের ক্ষমতা রাজ্য সরকারের নেই। এমন নিয়োগে আচার্যের স্বাক্ষর না থাকলে তা গ্রহণযোগ্য নয়। রাজ্য এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গেলেও কলকাতা হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখে শীর্ষ আদালত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন