“হাইকোর্টের এই রায় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। একসাথে ৩৬ হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি বাতিল হলো। এটা কারোরই ভাল লাগবার কথা নয়। আমারও ভালো লাগছে না। কিন্তু এর জন্য দায়ী রাজ্য সরকার। কারণ রাজ্য সরকার টাকার বিনিময়ে বেআইনি নিয়গের ব্যবস্থা করেছিল।“ ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকেই দায়ী করলেন সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী।
শুক্রবার ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এঁরা সকলেই প্রশিক্ষণহীন। বিচারপতি জানিয়েছেন, আগামী ৪ মাস চাকরিচ্যুতরা স্কুলে যেতে পারবেন। বেতন পাবেন পার্শ্ব শিক্ষক বা প্যারা টিচার হিসাবে। রাজ্যকে আগামী ৩ মাসের মধ্যে এই পদে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে শেষ করতে হবে।
আদালতের এই রায়ের পরই তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করে সুজন চক্রবর্তী বলেন, “২০১৬ সালে যখন এই নিয়োগ হয় তখনই বিভিন্ন সূত্র মারফত আমরা জানতে পেরেছিলাম ২০ শতাংশ জেনুইন নিয়োগ, বাকি ৮০ শতাংশ টাকা দিয়ে নিয়োগ পেয়েছেন। আমরা বিধানসভায় বারবার দাবি জানিয়েছিলাম নিয়োগ তালিকা প্রকাশ করার। কিন্তু সরকার তা করেনি। প্রথমে শোনা গিয়েছিল ৪২ হাজার চাকরি, তারপর জানা গেল ৪০ হাজার, তারপর কোথা থেকে ৪৫ হাজার নিয়োগ হয়ে গেল। অর্থাৎ জালিয়াতি যে হয়েছে স্পষ্ট।“
সিপিআইএম নেতা বলেন, “আদালত বলেছে দুর্নীতিগ্রস্তদের ৩ মাসের মধ্যে খারিজ করে সেই শূন্যপদে জেনুইনদের নিয়োগ করতে হবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে যেন সরকার এটা করে। যে ২০ শতাংশ যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদেরও মানুষ সন্দেহের চোখে দেখতেন। রাজ্য সরকারের অপদার্থতার জন্য তাঁদের অসম্মানিত হতে হচ্ছিল। এবার তাঁরা অন্তত মর্যাদার সাথে চলতে পারবেন।”
তিনি আরও বলেন, “এমনকি যাঁদের চাকরি বাতিল হলো, তাঁদের অনেক কম বয়স। রাজ্য সরকারের অপদার্থতার জন্য তাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের জন্যই তাঁদের চাকরি গেল। তাঁরা অন্য কোথাও চাকরি খুঁজতে পারতেন, এই সরকারের জন্য তা হয়নি।“
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে আক্রমণ করে বলেন, “রাজ্যে দুর্নীতির ভূমিকম্প হচ্ছে। দুর্নীতিতে পশ্চিমবঙ্গ গিনেস বুকে নাম তুলবে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন