গত ২৮ আগষ্ট উচ্চ প্রাথমিকে ১৪,০৫২টি পদে নিয়োগের জন্য নতুন মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। সেই মামলা খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই হবে নিয়োগ প্রক্রিয়া।
হাইকোর্টের নির্দেশ সংরক্ষণ নীতি-বিরোধী, এই দাবি তুলে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজীব ব্রহ্ম-সহ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী। ফলে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নতুন করে জট তৈরি হয়। শুক্রবার সেই মামলাটি ওঠে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে। আদালত শুনানিতে জানিয়েছে, ১৪,০৫২ টি শূন্যপদে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নিয়োগ হবে। নিয়োগপত্র দিতে বাধা নেই। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করবে না।
এ বিষয়ে নিয়োগের পক্ষের আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মৌখিক পর্যবেক্ষণ, ২০১৬ সাল থেকে একটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বার বার নাক গলানো উচিত নয়। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে বাম ও বিজেপির চক্রান্ত খারিজ হয়ে গেল।’’
২০১৫ সাল থেকে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলে আছে। হাইকোর্টের নির্দেশে বার বার স্থগিত হয়ে যায় নিয়োগ প্রক্রিয়া। ২০২০ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বাতিল করে দেয়। এরপর ২০২৩ সালে প্যানেল প্রকাশের অনুমতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সেই সময় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, প্যানেল প্রকাশ করলেও কাউকে নিয়োগের সুপারিশ দিতে পারবে না এসএসসি। গত ১৮ জুলাই এই মামলার শেষ শুনানি ছিল।
এরপর গত ২৮ আগষ্ট কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চে এই মামলার রায় ঘোষণা হয়। বেঞ্চ এসএসসিকে নির্দেশ দেয় ১৪,০৫২ পদে নিয়োগের জন্য নতুন মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে শুরু হয়েছিল মেধাতালিকা প্রকাশ। কিন্তু শীর্ষ আদালতে মামলা ওঠার পর ফের স্থগিত হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে অভিযোগ ওঠে, শুধুমাত্র অনুমানের ভিত্তিতে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া থেকে ১,৪৬৩ জনকে বাদ দেওয়া হয়। মামলাকারীরা জানান, ওই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কী কারণ রয়েছে, তা জানানো হয়নি। পরে চার বার তা খতিয়ে দেখে এসএসসি। শেষে ইন্টারভিউ থেকে বাদ পড়েন ৭৪ জন। সে ক্ষেত্রেও সঠিক নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল।
এছাড়া, সংরক্ষণের নীতি না মেনে কাউন্সেলিংয়ের অভিযোগ ওঠে এসএসসির বিরুদ্ধে। তাছাড়া, ওএমআর শিট নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল আদালত। হাইকোর্ট আগস্ট মাসের নির্দেশে জানিয়েছিল, বাদ দেওয়া ১,৪৬৩ জনকে যুক্ত করে ওই ১৪,০৫২ জনের মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে এসএসসিকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন