কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতির মধ্যে বেনজির সংঘাত মামলায় অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার ফের এই মামলার শুনানি। আপাতত মেডিক্যাল কলেজে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে না কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ ও ডিভিশন বেঞ্চ। আজ শনিবার শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই মামলার অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছে।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশেও স্থগিতাদেশ জারি করল শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এই মামলায় যে নির্দেশ দিয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে আবেদন জানায় রাজ্য। সুপ্রিম কোর্ট সেই অনুমতিও দিয়েছে। সেই সঙ্গে রাজ্যকে নোটিস দেওয়া হয়েছে শীর্ষ আদালত থেকে। মামলাকারীকেও নোটিস দেওয়া হয়েছে। নোটিশ পাঠানো হয়েছে সিবিআইকেও।
শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, সোমবার এই মামলার শুনানি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে মেডিক্যাল কলেজ মামলায় সিবিআই তদন্তও।
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘‘দুই বেঞ্চের কারও বিরোধিতা করা হচ্ছে না। তবে ডিভিশন বেঞ্চে যে আবেদন করা হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা আমাদের বক্তব্য লিখিত আকারে জানাতে চাই।’’
বৃহস্পতিবার মেডিক্যাল কলেজের দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতির মধ্যে সংঘাত বাধে। এই ঘটনার পর এই মামলায় স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে হস্তক্ষেপ করে শীর্ষ আদালত। জরুরী ভিত্তিতে শনিবার ছুটির দিনে হয় এই মামলার শুনানি।
বেঞ্চে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জীব খন্না, বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি সূর্যকান্ত, বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু। বিচারপতি সূর্যকান্ত ভার্চুয়াস মাধ্যমে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি, সিবিআইয়ের করা এফআইআরও খারিজ করা দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
এরপর ডিভিশন বেঞ্চের এই নির্দেশের প্রক্রিয়াগত ‘ত্রুটি’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি তাঁর নির্দেশনামায় বিচারপতি সেন সম্পর্কে একাধিক অভিযোগ তোলেন। এমনকি, বিচারপতি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা-ও তিনি কার্যকর হবে না বলে জানিয়ে দেন। অর্থাৎ, এই মামলায় সিবিআইকে তিনি তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে বলেন।
পাশাপাশি, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে বসে ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সৌমেন সেনের বিরুদ্ধে একাধিক মন্তব্য করেন। সৌমেন সেনকে ‘রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট’ বলেও অভিহিত করেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন