প্রধানমন্ত্রীর 'সব কা সাথ, সব কা বিকাশ' স্লোগান বন্ধের পাশাপাশি বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চা বন্ধের ডাক দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। যা নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির।
বুধবার কলকাতায় বিজেপির কার্যনির্বাহী বৈঠকে বক্তব্য রাখেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। তাঁদের সামনেই শুভেন্দু বলেন, ''সব কা সাথ, সব কা বিকাশ' বন্ধ করা হোক। আমিও বলেছি রাষ্ট্রবাদী হিন্দু। আপনারাও বলেছেন সব কা সাথ, সব কা বিকাশ। কিন্তু আর বলবো না। এবার থেকে বলবো যো হামারে সাথ, হাম উনকে সাথ'।
তিনি আরও বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের ভোট দিতে দেওয়া হচ্ছে না। এই লোকসভা নির্বাচনে শওকত মোল্লা হিন্দুদের ভোট দিতে দেয়নি। বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চা রেখে কোনো লাভ নেই। সংখ্যালঘু মোর্চা তুলে দেওয়া হোক।'
শুভেন্দুর এই মন্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, 'এর সাথে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষকেই সম্মান করি। কিন্তু যারা দেশের ক্ষতি করে তাদের বিরুদ্ধে আমরা।'
অবস্থা বেগতিক বুঝে নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেন শুভেন্দু অধিকারী। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখা হচ্ছে। একজন বিজেপি কর্মী হিসেবে এই কথা বলেছি। পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে দাঁড়িয়ে এটা পরিষ্কার মুসলিম সম্প্রদায় আমাদের ভোট দেননি। ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ মুসলিম ভোটের ৯১ শতাংশ গিয়েছিল তৃণমূলের দখলে। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে ৯৫ শতাংশ মুসলিম ভোট পেয়েছে তৃণমূল। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক দিক থেকেই আমি মন্তব্য করেছি। কারণ বাংলার মুসলিমদের চিকিৎসারও ব্যবস্থা করেছি আমি। কিন্তু তারা ভোট দেয়নি আমাদের।
তিনি আরও জানান, আমি বলতে চেয়েছিলাম যারা দেশবিরোধী এবং রাজ্যবিরোধী কাজকর্মে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে আমরা। প্রধানমন্ত্রীর সব কা সাথ, সব কা বিকাশ, সব কা বিশ্বাস, সব কা প্রয়াস স্লোগানের প্রতি আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অবশ্য শুভেন্দু অধিকারীর দাবি খারিজ করেছেন। তিনি জানান, কোন প্রস্তাব গৃহীত হবে সেটা ঠিক করবে রাজ্য সভাপতি ও তার টিম। উনি (শুভেন্দু অধিকারী) একজন ডেলিগেট হিসেবে নিজের বক্তব্য রেখেছেন। নিজের ব্যক্তিগত মত দিয়েছেন। অনেকেই দেয়। কন্তু সব কিছু গৃহীত হয় না। আর আমরা মুসলমান বিরোধী নই। আমরা এপিজে আব্দুল কালাম, কাজী নজরুল ইসলামের মতো মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ চাই।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে সব কা সাথ, সব কা বিকাশের ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী কেবল একটি সম্প্রদায়ের জন্য নয়। ভারতের সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ, সমস্ত শ্রেণীর মানুষকে নিয়েই সকলের উন্নয়ন করা হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন