Teesta Setalvad: 'বিচারের নামে প্রহসন করেও গুজরাট গণহত্যার দাগ মোছা যাবেনা' - মহম্মদ সেলিম

তিস্তা শীতলাবাদের মুক্তি চেয়ে রবিবার এক প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হয় কলকাতা। মিছিলের শেষে তিস্তার অবিলম্বে মুক্তি চেয়ে মহম্মদ সেলিম বলেন, বিচারের নামে প্রহসন করেও গুজরাট গণহত্যার দাগ মোছা যাবেনা।
তিস্তা শীতলাবাদের মুক্তি চেয়ে কলকাতায় বামফ্রন্টের মিছিল
তিস্তা শীতলাবাদের মুক্তি চেয়ে কলকাতায় বামফ্রন্টের মিছিল নিজস্ব চিত্র
Published on

আদালতের বিচারপতিরা না পারলে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেই ইনসাফ ছিনিয়ে আনবেন। ব্রিটিশরা ষড়যন্ত্র মামলা করেও ভারতবাসীকে দমন করতে পারেনি, বর্তমান শাসকরাও তা পারবে না। ধৃত মানবাধিকার কর্মী তিস্তা শীতলাবাদ সহ অন্যান্য মানবাধিকার কর্মীর মুক্তির দাবিতে রবিবার কলকাতায় এক মিছিলের শেষে একথা জানান সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।

সমাজকর্মী তিস্তা শীতলাবাদের মুক্তি চেয়ে রবিবার এক প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হয় কলকাতা। বৃষ্টিভেজা রাজপথে কয়েক হাজার মানুষ তিস্তার অন্যায় গ্রেপ্তারির প্রতিবাদ জানিয়ে পথ হাঁটেন। পার্ক সার্কাস থেকে এন্টালি মার্কেট পর্যন্ত এই মিছিলে পা মেলান সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, বিশিষ্ট অভিনেতা বাদশা মৈত্র, সমাজকর্মী সায়রা শাহ হালিম সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

এদিনের মিছিলের শেষে তিস্তা শীতলাবাদের অবিলম্বে মুক্তি চেয়ে মহম্মদ সেলিম বলেন, বিচারের নামে প্রহসন করেও গুজরাট গণহত্যার দাগ মোছা যাবেনা। কোনোভাবেই মোদী, অমিত শাহরা নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবেন না। গর্দান নেবার ভয় দেখিয়ে সকলের শিরদাঁড়া নত করা যাবেনা। তিনি আরও বলেন, গুজরাট গণহত্যার পর সত্য প্রকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিস্তা। কীভাবে এহসান জাফরিকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল, সেনা পৌঁছানো সত্ত্বেও কেন তাদের ব্যবহার না করে বসিয়ে রাখা হয়েছিল সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন তিস্তা। অনেক তথ্য সামনে এসেছিল। এই গণহত্যায় যারা যুক্ত তাদের অনেকেরই নাম এখন প্রকাশ্যে এসে গেছে।

মিছিলের শুরুতেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, গুজরাট গণহত্যার পর সেখানকার বিধ্বস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিস্তা শীতলাবাদ। তাঁর সংগঠনের মাধ্যমে আর্ত মানুষকে সাহায্য করেছিলেন। তাঁর গ্রেপ্তারি গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ। আমরা অবিলম্বে তিস্তা শীতলাবাদ সহ ধৃত মানবাধিকার ও সমাজকর্মীদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, গুজরাট দাঙ্গার সময় একাধিক জায়গায় তিনি নিপীড়িত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিস্তা। প্রায় দুই দশক দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করেছেন তিনি। গুজরাটের দাঙ্গার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে একাধিকবার তিনি কলম ধরেছিলেন। তাঁর ‘Foot Soldier of the Constitution’ বইটির পাতায় পাতায় রয়েছে গুজরাট দাঙ্গার বিভিন্ন প্রমাণ।

সেই সময় নরেন্দ্র মোদী সহ ৬২ জন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে CJP। যার সম্পাদক ছিলেন তিস্তা শীতলাবাদ। ২০১৪ সালে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর নানাভাবে হেনস্থা করা হয় তিস্তাকে। কিন্তু ভয় না পেয়ে তিনি নিজের লড়াই চালিয়ে গেছেন।

গুজরাট পুলিশের অ্যান্টি টেরর স্কোয়াড (ATS) গত শনিবার মুম্বাইতে তিস্তাকে গ্রেফতার করে। পরে রাতের দিকেই তাঁকে আহমেদাবাদে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। তিস্তা ছাড়াও গুজরাট পুলিশের প্রাক্তন ডিজি আর বি শ্রীকুমার এবং সাসপেন্ডেড আইপিএস সঞ্জীব ভাটের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁরা ২০০২ গুজরাট দাঙ্গার প্রসঙ্গিত তথ্য বিকৃত করেছেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে সিপিআই(এম) সহ বামফ্রন্টের শরিক দলগুলি কলকাতার রাজপথে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয়। তাদের দাবি, তিস্তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দিতে হবে। শাস্তি দিতে হবে গুজরাট দাঙ্গার কুচক্রীদের।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in