অসুস্থ প্রায় ৩০, তবুও আমরণ অনশনে অনড় টেট উত্তীর্ণরা, স্যালাইন হাতেই বিক্ষোভস্থলে এক আন্দোলনকারী

চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত 'আমরণ অনশন'-র সিদ্ধান্ত নেওয়ায় গত ৩ দিনে বিক্ষোভস্থলেই অসুস্থ হয়েছেন প্রায় ৩০ জন। তাঁদের মধ্যে এক চাকরিপ্রার্থী স্যালাইন হাতেই ফিরে গেছেন বিক্ষোভস্থলে।
স্যালাইন হাতেই বিক্ষোভস্থলে এক আন্দোলনকারী
স্যালাইন হাতেই বিক্ষোভস্থলে এক আন্দোলনকারীছবি সংগৃহীত
Published on

দুচোখে স্বপ্নভঙ্গের আতঙ্ক। চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও দীর্ঘ আট বছর ধরে বেকারত্বের যন্ত্রণা। ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে চতুর্থ দিনেও অব্যাহত রইল ২০১৪ সালের টেট পাশ প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের বিক্ষোভ আন্দোলন। চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত 'আমরণ অনশন'-র সিদ্ধান্ত নেওয়ায় গত ৩ দিনে বিক্ষোভস্থলেই অসুস্থ হয়েছেন প্রায় ৩০ জন। তাঁদের মধ্যে এক চাকরিপ্রার্থী স্যালাইন হাতেই ফিরে গেছেন বিক্ষোভস্থলে।

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিক্ষোভস্থলে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ৩ জন চাকরিপ্রার্থীকে নিয়ে যাওয়া হয় বিধাননগর সেবা হাসপাতালে। অসুস্থরা হলেন পিয়ালি দে, রোকেয়া খাতুন এবং জয়িতা মণ্ডল। এদের মধ্যে পিয়ালির শারীরিক অবস্থা আরও সংকটজনক হওয়ায় তাঁকে স্যালাইন দিতে হয়। তবে, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বাড়ি নয়, পিয়ালি ফিরে গেছেন ধর্নাস্থলেই।

অন্যদিকে, পিয়ালির পাশাপাশি রোকেয়া একজন স্পন্ডিলাইটিস রোগী এবং জয়িতার ব্লাড সুগার ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ বুকের বাঁদিকে ব্যথা শুরু হওয়ায় তৎক্ষণাৎ তাঁকে আন্দোলনস্থল থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে, পিয়ালির মত বাকিরাও ফিরে যান বিক্ষোভস্থলে।

পিয়ালির দাবি, অনশন মঞ্চের কাছাকাছি কোথাও শৌচাগার না থাকায় সমস্যায় পড়ছেন বিক্ষোভকারীরা। চার দিন ধরে জল, খাওয়াদাওয়া কিছুই হচ্ছে না। যার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তাঁরা। তবে, অসুস্থ হলেও চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত 'আমরণ অনশন' জারি থাকবে।

অন্যদিকে, চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনকে অন্যায্য বলে দাবি করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে, ফের পদ্ধতি মেনে আবেদন এবং ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে ২০১৪ সালের টেট পাশ পরীক্ষার্থীদের। তবে, পর্ষদের এই দাবি কোনওমতেই মানতে নারাজ তাঁরা।

বিক্ষোভস্থল থেকেই এক চাকরিপ্রার্থী জানান - বাবা পেশায় দিন মজুর। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই শিক্ষকদের দেখে আমার শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু, ছোটবেলা থেকে দেখা সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবের কাছে হারিয়ে গেছে। দুর্নীতি আমাদের স্বপ্নকে গলা টিপে মেরে ফেলেছে।"

অন্য এক চাকরিপ্রার্থীর কথায়, "পুলিশ কী করে সেটা দেখার জন্য জেগে থাকতে হচ্ছে পালা করে। কার কি সুবিধা-অসুবিধা তাই দেখার জন্য রাত জাগছি। রাত জাগা, ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ার ভয়ে কোন কষ্ট হচ্ছে না, কষ্ট হচ্ছে বেকারত্বের।" অন্যদিকে পুলিশ বারবার মাইকিং করে বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছে।

স্যালাইন হাতেই বিক্ষোভস্থলে এক আন্দোলনকারী
ফের সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেলেন মানিক ভট্টাচার্য, ED হেফাজতেই থাকতে হবে তৃণমূল বিধায়ককে

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in