প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নয়া মোড়। মামলাকারীরা যে ২,৭৮৭ জনকে বেআইনিভাবে নিয়োগ করার অভিযোগ করেছিলেন, তাঁরা কেউ টেট পরীক্ষার জন্য ফর্মই পূরণ করেননি। তাঁদের কারোর চাকরির আবেদনপত্র আদালতে পেশ করতে পারল না প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের এই মামলার শুনানি ছিল। এ দিন পর্ষদের পক্ষ থেকে ২,৭৮৭ জনের নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র সহ চাকরির আবেদনপত্র আদালতে জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পর্ষদ আদালতে জানিয়েছে যে ২৩ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২,৭৮৭ জনের আবেদনপত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই তারা সব নথি আদালতে জমা দিতে পারছে না।
মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এবং আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্তের অভিযোগ, চাকরি পাওয়া ২৭৮৭ জন চাকরির জন্য কোনো আবেদনই করেননি। এই অভিযোগের ভিত্তিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে ২,৭৮৭ জনের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু পর্ষদ আজ তা দিতে পারেনি।
তবে বাকি যে নথি শুক্রবার পর্ষদ আদালতে জমা দিয়েছে, তা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশমামলাকারীদের আইনজীবীরা। আজ জমা দেওয়া নথিপত্রের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের দ্বিতীয় মেধাতালিকা, পরীক্ষার্থীদের বাড়তি ১ নম্বর করে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তার প্রস্তাবপত্র, সেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি যে মত দিয়েছিলেন তার নথি, নির্বাচন কমিটির সদস্যদের নাম এবং মতামতের নথি এবং শিক্ষা দপ্তরের অনুমতিপত্র রয়েছে। এগুলো সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় ২৩ লক্ষ প্রার্থী চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন। তাদের মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছিলেন ২১ লক্ষ প্রার্থী। উত্তীর্ণ হয়েছিলেন দেড় লক্ষ।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদকে নিয়োগ সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথির আসল কপি আনতে বলেছিলেন। পর্ষদের জমা দেওয়া নথিতে সন্তুষ্ট নন বিচারপতি।
সূত্রের খবর, পর্ষদের জমা দেওয়া নথিগুলি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর পাশাপাশি পর্ষদকে অন্য নথি আনার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই নির্দেশ মেনেই শুক্রবার পর্ষদ আদালতে নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি জমা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন