টেট দুর্নীতিকাণ্ডের নয়া মোড়। জেল হেফাজতে থাকা অপসারিত পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ভাই এবং জামাইয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বিপুল অঙ্কের টাকার লেনদেন হয়েছে। এমনটাই দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির। মানিক ভট্টাচার্যের ফের ১৪ দিন হেফাজতের আবেদন জানিয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। তাঁদের অভিযোগ, মানিক ভট্টাচার্য তদন্তে সহযোগিতা করছেন না।
টেট দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার ফের আদালতে পেশ করা হয়েছিল নদীয়ার পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ককে। আদালতের সওয়ালে মানিকের বিরুদ্ধে আরও বিষ্ফোরক অভিযোগ আনেন ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। তিনি বলেন, চাকরি দেওয়ার নামে দীর্ঘদিন ধরে প্রার্থীদের কাছ থেকে যে টাকা তোলা হয়েছে, তার অনেকটাই ঢুকেছে মানিকের ভাই ও জামাইয়ের অ্যাকাউন্টে। এছাড়া আরও ৩২৫ জন প্রার্থীকে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
ইডির আইনজীবী আরও জানান, ওই ৩২৫ জন প্রার্থী টেট উত্তীর্ণ নন। তাঁদের মাথা পিছু ৭ লক্ষ টাকা করে নিয়ে নম্বর বাড়িয়ে মেধা তালিকায় নাম তুলে দেওয়া হয়। সেই কারণেই চাকরি পান তাঁরা।
সূত্রের খবর, ২০১৪ সালের অনুত্তীর্ণ টেট প্রার্থীদের থেকে যে পরিমাণ টাকা নেওয়া হয়েছে তার হিসেব করলে অঙ্কটা ছাড়িয়ে যাবে প্রায় ২৫ কোটি। এছাড়াও অফলাইন ট্রেনিং সেন্টারগুলি থেকে যত টাকা নেওয়া হয়েছে তার পরিমাণ প্রায় ২০ কোটি। শুধু তাই নয়, বিবেকানন্দ, নেতাজী এবং রামকৃষ্ণের নামে থাকা বিভিন্ন ট্রেনিং সেন্টারগুলি থেকেও নেওয়া হয়েছে বিপুল পরিমাণ টাকা।
এদিন আদালতের সওয়ালে মানিকের আইনজীবী প্রশ্ন করেন, সারদা মামলার তদন্ত ১০ বছর ধরে চলছেই। এক্ষেত্রেও কি তাই হবে? এই তদন্ত শেষ হতে আর কতদিন লাগবে? ততদিনে তো অভিযুক্তদের বয়স অনেক বেশি হয়ে যাবে। পাল্টা ইডির আইনজীবী বলেন, মামলা যেখানে ৭ বছরের পুরনো, সেখানে অভিযুক্তদের সাড়ে তিন বছর ধরে হেফাজতে নিয়ে জেরা করাই যায়।
অন্যদিকে তৃণমূল বিধায়কের দাবি, আমাকে যেসব প্রশ্ন করা হয়েছিল তার কোনওটারই উত্তর আমার জানা নেই। তাহলে কী করে উত্তর দেব? তাঁরা (ইডি) বারবার একই প্রশ্ন করছেন। তাই আমি উত্তর দিতে পারছি না। এখানে অসহযোগিতার প্রশ্নই আসেনা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন