বুধবার সন্ধ্যার দীর্ঘ বৈঠকের পরেও মিলল না কোনো সমাধান সূত্র। জুনিয়র চিকিৎসকরা জানান, বৈঠকের ‘মিনিট্স’ (লিখিত কার্যবিবরণী) দেননি মুখ্যসচিব, শুধু মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন। এরপরেই তাঁরা জানিয়ে দেন, কর্মবিরতি চলবে। তবে তাঁরা কর্মবিরতি তুলে নিতে চান, কিন্তু সেটা সম্মানজনকভাবে।
পাঁচ দফা দাবির চতুর্থ এবং পঞ্চম দফা নিয়ে আলোচনা করতে চেয়ে বুধবার স্বাস্থ্যসচিবকে ইমেল করেছিলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁদের সন্ধ্যা ৬.১৫ মিনিটে নবান্নে সভাঘরে পৌঁছানোর বার্তা দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ নবান্ন সভাঘরে বৈঠকে বসেন তাঁরা। প্রায় পাঁচ ঘন্টা পর বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসে জুনিয়র চিকিৎসকরা জানান, “আজকের আলোচনা অত্যন্ত হতাশাজনক। সব বিষয়ে শুধুই মৌখিক আশ্বাস মিলেছে। ভেবেছিলাম প্রশাসন সদিচ্ছা নিয়ে আমাদের দাবি শুনবে। মুখে বলা হলেও দেওয়া হয়নি লিখিত আশ্বাস। আমাদের দাবির কার্যকর করতে সরকারের অনীহা দেখে আমরা হতাশ।”
নবান্ন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি অনিকেত মাহাতো বলেন, “আন্দোলনের ৪০ দিনের মাথায় এসে স্বাস্থ্য সচিবের অপসারণ ও বাকি দুই দাবিতে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক ছিল আমাদের। হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা, থ্রেট কালচার, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, কলেজে কলেজে টাস্ক ফোর্স এই সব দাবি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কার্যবিবরণী নিয়ে মুখ্যসচিবের সঙ্গে কিছু জায়গায় সহমত তৈরি হয়নি। বৈঠকের ‘মিনিট্স’ দেননি মুখ্যসচিব, শুধু মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আমাদের সব দাবিগুলিকে ফের খসড়া আকারে বৃহস্পতিবার ইমেল মারফত পাঠাতে বলেছেন। আমরা কাজে ফিরতে চাই। কিন্তু কিছু বিষয়ে সমাধানসূত্র বেরোয়নি। যত ক্ষণ না দাবি পূরণ হচ্ছে আমরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাব।”
অন্যদিকে, এই বিষয়ে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বিক্ষোভস্থল থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আর এক প্রতিনিধি রুমেলিকা কুমার বলেন, “দীর্ঘ বৈঠকে আমাদের সব দাবি মুখ্যসচিব মেনে নিলেও তিনি ‘মিনিট্স’-এর সই করতে রাজি হননি। তিনি জানান, নির্দেশ জারি করতে দু’-এক দিন সময় লাগবে। আমাদের সব দাবি লিখিত আকারে মেল করে জানাতে বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর আমরা লিখিত ‘মিনিট্স’ পেয়েছিলাম। কিন্তু আজ বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি সই করলেন না। আমাদের যে লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবি ছিল সেটা যে সঠিক তা বোঝা গেল। আমরা হতাশ। দু’পক্ষ সহমত হতে পারলাম না।”
তিনি আরও বলেন, “হাসপাতালে নিরাপত্তা, থ্রেট কালচার, হাসপাতালের বেড নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা, ছাত্র ভোট, রেফারেল সিস্টেম এই সব দাবি সঠিক বলে বৈঠকে মেনে নেন মুখ্যসচিব। কিন্তু বৈঠক পরবর্তী কার্যবিবরণীতে এ সব কিছুই ছিল না। একটি ‘মিনিট্স’-এর সই করা নিয়ে যা হল তাতে আমরা হতাশ। মুখ্যসচিব আমাদের দাবিগুলিকে লিখিত আকারে মেল করতে বলেছেন। আমরা আগামী কাল তা করব। এবং পরবর্তী নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করব। আমরা কাজে ফিরতে চাই। কিন্তু আমরা নিরাপদ বোধ করছি না।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন