কাজের পরিধি বাড়লেও স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা ক্রমেই কমেছে কলকাতা কর্পোরেশনে। গত ১০ বছরে মিউনিসিপাল সার্ভিস কমিশন মারফত নিয়োগ হয়েছে মাত্র ৭০০-৮০০ জন। স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা কমে হয়েছে ১৩০০০। ফলে পুরো পরিষেবা পেতে ভোগান্তি হচ্ছে সাধারণ মানুষের।
কলকাতা কর্পোরেশনের অধীনে ১৪৪টি ওয়ার্ড রয়েছে। শুধু কলকাতা নয়, আশেপাশে পুরো এলাকাতেও কর্পোরেশন পরিষেবা দেয়। কাজের পরিসর বাড়লেও কর্মী সংখ্যা কমেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একসময় দাবি করেছিলেন, বছরে এক কোটি বেকারের চাকরি দেবেন। কিন্তু বাস্তব চিত্র অন্য কথাই বলছে।
কলকাতা করপোরেশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে কর্পোরেশনের স্থায়ী পদের সংখ্যা ছিল ৪৬১৯১। কিন্তু স্থায়ী কর্মী আছেন মাত্র ১৯০৯৭ জন। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার প্রথমবার ২০১১-১২ অর্থবর্ষে কর্মী সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ৯৬ জন। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯০৯৭। অর্থাৎ ১০ বছরে ১২৯৭২টি শূন্যপদ তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে শূন্যপদ ২৭ হাজার ৯৪। তবে এই বিপুল শূন্যপদে নিয়মিত নিয়োগের কোনও ব্যবস্থা করেনি সরকার। পরিবর্তে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানোর প্রবণতা বেড়েছে। দিন দিন কাজের চাপ বাড়ানো হয়েছে। ফলে কোনও কাজই কেউ সঠিক ভাবে সম্পন্ন করতে পারছেন না। এক একজনের উপর একাধিক বোরো বা ওয়ার্ডের দায়িত্ব থাকায় নজরদারি চালানো সম্ভব হচ্ছে না। যারা সমস্যা নিয়ে আসছেন, তাঁদেরও সমস্যার কোনো সমাধান হচ্ছে না।
কলকাতা কর্পোরেশনের আধিকারিক জানান, স্থায়ীকরণের অভাবে অস্থায়ী কর্মীদের দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। তবে স্থায়ীকর্মী থাকলে গুণগতমান বজায় থাকে। স্থায়ী পদে নিয়োগ হবে কি হবে না সেটা সম্পূর্ণ নীতিনির্ধারকদের বিষয়। কলকাতা কর্পোরেশনের বামফ্রন্ট কাউন্সিলরদের প্রাক্তন দলনেত্রী রত্না রায় মজুমদার বলেন, তৃণমূল বেকারদের চাকরি দেবে না, এটা তাদের নীতি। স্থায়ী কর্মীর বদলে অস্থায়ী কর্মীদের সামান্য টাকা দিয়ে কাজ করানো হয়। ফলে গুণমান ভালো হয় না। মানুষের পরিষেবা পেতে বছর কেটে যায়। ২৭ হাজারের বেশি স্থায়ীপদ শূন্য থাকলেও তাতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করে শিক্ষিত বেকারদের বঞ্চিত করে চলেছে রাজ্য সরকার। অবিলম্বে ওই পদে নিয়োগ করা হোক।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন