এ যেন অবাককাণ্ড। স্কুলই নেই কিন্তু লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সেই স্কুলের শৌচালয়স সংস্কার করা হয়েছে, আবার কোথাও একটা শৌচালয়কে দুটি শৌচালয় দেখানো হয়েছে। এভাবে ৩৮ লক্ষ টাকার হিসেবে কারচুপি করেছে কলকাতা পুরসভার শিক্ষা বিভাগ। এমনই অভিযোগ পেয়েছে পুরসভার ভিজিল্যান্স বিভাগ। যার তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুরসভার তরফ থেকে বিদ্যালয় সংস্কারের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ধার্য করা হয়েছিল। বিদ্যালয় পিছু ৬০ হাজার টাকা খরচ করা হয়। মোট ৬৩টি বিদ্যালয় ছিল। সবগুলির কাজ হয় ২০১৭-২০২০ সালের মধ্যে। কিন্তু তাতেই ব্যাপক গরমিল ধরা পড়েছে। বিভিন্ন মিডিয়া সূত্রে জানা গেছে, চেতলার একটি স্কুলের ঠিকানা বদলে গিয়েছিল ২০১১-১২ সালে। কিন্তু বিদ্যালয়ের পুরনো ঠিকানাতেই দু'টি শৌচাগার সংস্কার করা হয়। খরচ হয়েছিল ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। কিন্তু সেখানে তো স্কুলটাই নেই।
আবার বৌবাজার এলাকার ১৬, যদুনাথ দে রোডের একটি বিদ্যালয়ে প্রাতঃ ও দিবা বিভাগ রয়েছে। তার পাশেই একটি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। সেই স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে যসুনাথ দে রোডে একসাথে পঠন পাঠন হয়। কিন্তু বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুলেও নাকি শৌচালয় সংস্কারের কাজের জন্য টাকা খরচ করা হয়েছে। এই প্রাতঃ ও দিবা বিভাগের জন্য আলাদা আলাদা বিল করে একটিই শৌচালয় সংস্কারের কাজ করেছে পুরসভা।
অন্যদিকে শশিভূষণ দে স্ট্রিটের পুরসভার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একতলার শৌচাগার সংস্কারের জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা খরচ করা হয়েছিল। কিন্তু দেখা যায় ওই শৌচালয়ে কোনও কাজই হয়নি। আবার কোনো শৌচালয়ে দেখা যাচ্ছে বস্তা বস্তা সবজি পড়ে আছে।
শৌচালয় গরমিলের পাশাপাশি টেন্ডার নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। পরিচিত ঠিকাদারদের শৌচাগার সারাইয়ের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কোথাও ১০টি কাজ, কোথাও ৫টি আবার কোথাও ৪টি শৌচালয়ের টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় পুর শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন বর্তমান মেয়র পারিষদ অভিজিৎ মুখার্জি। তিনি বলেন, সবকিছু জানেন আধিকারিকরা। তাঁর কাজ ছিল শুধু সই করা। এর থেকে বেশি কিছু জানেন না তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন