বউবাজার ফাটলকাণ্ডে এবার সরাসরি তৃণমূল সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে এক হাত নিয়ে তিনি বলেন, 'ম্যান মেড নয়, দিস ইজ পার্টিকুলার আ ওম্যান মেড ডিজাস্টার।' পুরো ঘটনাটির জন্য তিনি রাজ্য সরকারকেই দায়ী করেছেন।
শুক্রবার ভোররাতে বউবাজারের মদন দত্ত লেনের একাধিক বাড়িতে দেখা দেয় বড়সড় আকারের ফাটল। ভয়ে পেয়ে সাড়ে চারটে নাগাদ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস হাতে পথে নামতে বাধ্য হন অসহায় এলাকাবাসী।
সেলিমের কথায়, এটা কোনও নতুন ঘটনা নয়, এর পুনরাবৃত্তি বহুবার হয়েছে। ঘটনার বহু আগে থেকেই আমরা বলে আসছি, পুরনো কলকাতা মানেই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এখানকার বাড়ি, বসতি সবই পুরনো। পৃথিবীর কোথাও কোনও বসতি এলাকার আন্ডারগ্রাউন্ডে এই রকমভাবে মেট্রোর কাজ হয় না।
গোটা পরিস্থিতির জন্য মেট্রো কর্তৃপক্ষের উপর ক্ষোভ উগরে দেন ভুক্তভোগীরা। এমনকি, সকাল সাড়ে ছ'টা নাগাদ মেট্রোর প্রতিনিধি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এলে তাঁকে এলাকায় প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়।
সিপিআই(এম) নেতা বলেন, একজন তাঁর সংকীর্ণ ব্যক্তি স্বার্থের জন্য রাজ্য সরকারের থেকে এই প্রোজেক্টটা নিয়ে নেন রেল দপ্তরে। অথচ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি বললেন এই কাজ রেল দপ্তর করবে না! এই দায়িত্ব দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্প পুরোটাই রাজ্য সরকারের অধীন। তার জন্যই আজ বউবাজার তথা সমগ্র কলকাতারবাসীকে ভুগতে হচ্ছে।
বাসিন্দাদের একাংশ অন্যত্র চলে যেতে চাইলেও, বেশিরভাগই হোটেলে গিয়ে উঠতে নারাজ। এ প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক বলেন, কয়েক হাজার কোটি টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছে। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে, যার ফলে মাঝেমধ্যেই এখানে এসে পুলিশকে নিরাপত্তা দিতে হচ্ছে। এটা তো হওয়ার কথা ছিল না।
মমতাকে কটাক্ষের সুরে সেলিম আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী তুলির টানে দেবীর চক্ষুদান থেকে শুরু করে খড় জোগাড় করে প্রতিমা তৈরী, কার্নিভাল, মন্ত্র উচ্চারণ, গান গাওয়া, গানে সুর দেওয়া সবই পারেন। কিন্তু তাই বলে তিনি তো আর ইঞ্জিনিয়ার বা ভূ-তত্ত্ববিদ নন! কাজ কীভাবে হবে তা ঠিক করবেন ইঞ্জিনিয়াররা। মমতা ব্যানার্জী তো আরবান বা ট্রাস্টপোর্ট প্ল্যানার হতে পারেন না। তাই এই সবকিছুর দায় তাঁকেই নিতে হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন