তিন বছরের মাথায় ফের ফাটল আতঙ্কের শিকার বউবাজার। দুর্গা পিতুরি লেনের পর এবার মদন দত্ত লেনের ১০টি বাড়ির একাধিক জায়গায় দেখা গেল ভয়াবহ ফাটল। প্রাণনাশের আতঙ্কের জেরে জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে এসেছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্যই এই ফাটল দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার ভোররাতে বউবাজারের মদন দত্ত লেনের একাধিক বাড়িতে দেখা দেয় বড়সড় আকারের ফাটল। ভয়ে পেয়ে সাড়ে চারটে নাগাদ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস হাতে পথে নামতে বাধ্য হন অসহায় এলাকাবাসী। বাসিন্দাদের একাংশ অন্যত্র চলে যেতে চাইলেও, বেশিরভাগই হোটেলে গিয়ে উঠতে নারাজ। গোটা পরিস্থিতির জন্য মেট্রো কর্তৃপক্ষের উপর ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। এমনকি, সকাল সাড়ে ছ'টা নাগাদ মেট্রোর প্রতিনিধি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এলে তাঁকে এলাকায় প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়।
মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর প্রশ্ন, ১) কেন বারবার এমন বিপদের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের? ২) সব জানা সত্ত্বেও কেন অতীতের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এলাকাবাসীর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না?
এযাবৎকালে তিনবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য বউবাজারের একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ২০১৯ সালে হাওড়া-শিয়ালদহ মেট্রো রুটের জন্য সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ চলাকালীন কেঁপে উঠেছিল দুর্গা পিতুরি লেনের একাধিক বাড়ি। ফাটলের জেরে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে একাধিক বাড়ি। এরপর চলতি বছর মে মাস নাগাদ পুনরায় ফাটল আতঙ্ক ফিরে আসে বউবাজারের স্যাকরাপাড়া লেনে। তারপর শুক্রবার মাঝরাতে ঘটল এই দুর্বিষহ ঘটনা।
ঘটনার জেরে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে এক হাত নেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তাঁর কথায়, যতদিন না রেলবোর্ডের একেবারে শীর্ষস্থান থেকে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, ততদিন এই পরিস্থিতি চলতেই থাকবে। কারণ, এখানে যারা কাজ করছেন, কন্টাক্ট নিয়েছেন তাঁরা বিষয়টাকে সামলে উঠতে পারছেন না।
তিনি আরও বলেন, এইরকম ভাবে চলতে থাকলে দুদিন অন্তর ফাটল দেখা দেবে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদেরকে কোথাও শিফট করব, তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করব, আবার দু'বছর পর একই সমস্যা হবে। রেলবোর্ডকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কী করবেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন