সোমবার রাজ্যের বিধানসভায় শেষ হল বাদল অধিবেশন। আর অধিবেশনের শেষ দিনে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল এবং প্রধান বিরোধী দল বিজেপির ঐক্যের সাক্ষী থাকল বিধানসভা। বাংলা ভাগ বিরোধী প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার শেষে ‘অখণ্ড পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নে অঙ্গীকারবদ্ধ’ হল শাসক-বিরোধী দুই পক্ষ। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিরোধী দলনেতার একটি মন্তব্য প্রস্তাবে যোগ করে নেওয়া হয়। তারপর একযোগ বিধানসভায় পেশ হয় সংশোধিত প্রস্তাব।
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের আটটি জেলাকে উত্তর-পূর্ব পর্ষদে যুক্ত করতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব করেছেন উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য় সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর তারপরেই ফের বাংলা ভাগ নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। এই আবহেই বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে মালদা এবং মুর্শিদাবাদকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে যুক্ত করার প্রস্তাব দেন।
এই সবের বিরুদ্ধে সোমবার বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে বিধানসভায় পশ্চিমবঙ্গ ভাগের বিরোধিতা করে প্রস্তাব আনে তৃণমূল। আজকের বিধানসভা অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও। বিজেপির একাধিক জনপ্রতিনিধির নাম করে বাংলা ভাগে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তোলে তৃণমূল। তার আগে বক্তৃতা দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দুর পরেই বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। শুভেন্দুর সুরেই মমতা বলেন, “আমরা অখণ্ড পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন চাই। আমরা বিভাজন চাই না।” গ্রেটার কোচবিহারের দাবি তোলা বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজের বাড়ি গিয়েছিলেন কেন মমতা, এই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু। জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি অনন্ত মহারাজের কাছে গিয়েছি তো কী হয়েছে? কেউ বাডিতে চা খেতে ডাকলে যাব। আপনি ডাকলেও যাব।”
এরপরেই শুভেন্দুর বক্তব্য যোগ করে বিধানসভায় পেশ করা হয় সংশোধিত প্রস্তাব। 'অখণ্ড পশ্চিমবঙ্গ, অবিভক্ত পশ্চিমবঙ্গ উন্নয়ন নিয়ে প্রস্তাব আনুন, আমরা উন্নয়নে অঙ্গীকারবদ্ধ', বলেছিলেন শুভেন্দু। তৃণমূল এবং বিজেপি বিধায়কদের সমর্থনে বিকল্প প্রস্তাব পাশ হয়ে যায় বিধানসভায়। সৌহার্দ্যের আবহে বিধানসভায় রাজ্য সঙ্গীত ও জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়। রাজ্য সঙ্গীতের সময় শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা উঠে দাঁড়ান।
অধিবেশন শেষ হওয়ার পর অবশ্য ঐক্যের ছবিটি খুব বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয়নি। বিধানসভার বাইরে শুভেন্দু বলেন, “প্রস্তাবের নামে একটি রাজনৈতিক লিফলেট পেশ করা হয়েছিল। আমরা প্রত্যেকে অখণ্ড পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নে অঙ্গীকারবদ্ধ।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন