লোকসভা ভোটের আগে বড় ধাক্কা খেল শাসকদল। বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। সোমবার দুপুরে বিধানসভায় গিয়ে স্পীকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দিয়েছেন তিনি। আগেই সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন, দলও ছেড়ে দেবেন তিনি।
বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বেরিয়ে বিধানসভার সামনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। শাসকদলের দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন। এই দল তাঁর জন্য না, বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
তাপস রায়ের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা গেছে, এরপর বিজেপিতে যোগ দেবেন তিনি। ৬ মার্চ বারাসাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দেবেন তিনি। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করতে পারেন তিনি।
সোমবার বিধানসভায় যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। তখনও দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। জানান, তিনি দলে অবহেলিত এবং অসম্মানিত।
রবিবারই একাধিক সংবাদমাধ্যমে তাপস রায়ের তৃণমূল ছাড়ার গুঞ্জন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। সোমবার সকালেই মান-ভঞ্জনের জন্য তাপসের বৌবাজারের বাড়িতে যান রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয় তিনজনের। কিন্তু তাতে বরফ গলেনি। ব্রাত্য এবং কুণাল বেরিয়ে যাওয়ার পরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তাপস।
তিনি বলেন, "দলে এত দুর্নীতি, সন্দেশখালিকাণ্ড, আমাতে এত অপমান, অসম্মান, অবহেলা - আমাকে তাড়না দিয়েছে। বেশ কিছু দিন ধরে আমি দলের থেকে তফাত বজায় রেখে চলছি। শেখ শাহজাহানকে ইডি টার্গেট করেছে, এমন কথা মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলেছেন। আমার বাড়িতেও গত ১২ জানুয়ারি ইডি এসেছিল। কিন্তু দল আমার পাশে দাঁড়ায়নি। কেউ একটা ফোনও করেনি। আমার পরিবারকে কেউ সান্ত্বনা দেয়নি।’’
উল্লেখ্য, গত ১২ জানুয়ারি দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা ধরে তাপসের বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাড়িতে তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি। তাঁর মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে গিয়েছিল ইডি। তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। কিন্তু সেই নিয়ে দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফ থেকে কোনও মন্তব্য পাননি তিনি। অথচ, শেখ শাহজাহান বা ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে তল্লাশির নামে কী ভাবে সব তছনছ করা হয়েছে, সে বিষয়ে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়েছেন মমতা! এই ঘটনায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল তাপসের মনে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন