রেশন বন্টন দুর্নীতিকাণ্ডে শুধু জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকই নন, তাঁর স্ত্রী ও কন্যাও জড়িত! আদালতে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে ইডি। পাশাপাশি বাড়ির পরিচারক-পরিচারিকাদের নামেও নাকি সম্পত্তি কিনেছিলেন রাজ্যের বর্তমান বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
শুক্রবার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করে ইডি। রাজ্যের মন্ত্রীকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করেন কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকরা। আদালত সূত্রে খবর, ইডি বিচারককে জানায় রেশন দুর্নীতিতে কালো টাকা সাদা করার প্রক্রিয়া চলেছে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের স্ত্রী ও কন্যাও এই দুর্নীতির সাথে জড়িত রয়েছেন। ইডির দাবি, ২০১৫-২০১৬ সালে নির্বাচনী হলফনামায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তাঁর স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে ৪৫ হাজার টাকা দেখিয়েছিলেন। কিন্তু পরের বছরই সেই টাকা বেড়ে হয় ৬ কোটি টাকা। দুর্নীতিতে ধৃত বাকিবুরের সাথেও যোগ মিলেছে জ্যোতিপ্রিয়র। তাই হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
ইতিমধ্যেই পরিবারের সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে মন্ত্রীর মোবাইল ফোন। মোবাইল ফোনটি ফরেন্সিকে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে বাকিবুরের মোবাইলের নথিও খতিয়ে দেখছে ইডি। সূত্রের খবর, বাকিবুরের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে তথ্য রয়েছে। সেখানে নাকি বলা হয়েছে মন্ত্রীকে টাকা পেমেন্ট করা হয়েছে। এই তথ্য ২০২০ সালের। সেই সময় খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
জ্যোতিপ্রিয়র কন্যা ও স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে নগদ কোটি কোটি টাকা জমা পড়েছে। কারা কী কারণে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ মন্ত্রীর স্ত্রী ও কন্যার অ্যাকাউন্টে জমা করলেন তাও তদন্ত করছে ইডি। মন্ত্রীর পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছিলেন মন্ত্রীর পিএ অমিত দে। তাঁকেও তলব করেছে ইডি।
গতকাল শুনানি শেষে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ইডি হেফাজত হয় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। রায় দানের পরই অজ্ঞান হয়ে এজলাসে পড়ে যান তিনি। তাঁকে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সে করে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আপাতত তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। আদালতের নির্দেশ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ১০ দিন হেফাজতে নিতে পারবে ইডি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন