সারদাকাণ্ডে কুণাল ঘোষের গ্রেফতারির ১০ বছর পূর্তি হলো বৃহস্পতিবার। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে জেলে যাওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে পোস্ট করেছেন তৃণমূল নেতা। যেখানে রাজ্য এবং কেন্দ্র উভয় সরকারের এজেন্সির বিরুদ্ধেই নিজের লড়াইয়ের কথা লিখেছেন তিনি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কুণাল যখন গ্রেফতার হয়েছিলেন সেই সময় রাজ্য সরকার ছিল তৃণমূল কংগ্রেসেরই। তাহলে কি দলের মুখপাত্র হয়ে দলের বিরুদ্ধেই বেফাঁস মন্তব্য করলেন তিনি?
সালটা ছিল ২০১৩। রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরই যে খবর সবথেকে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল তা ছিল সারদা চিটফান্ড কাণ্ড। যার জেরে গ্রেফতার হতে হয়েছিল তৎকালীন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষকে। গ্রেফতারির ১০ বছর পূর্তিতে আজ তিনি লেখেন, "ঠিক দশ বছর আগে আজকের তারিখে বিনা দোষে চক্রান্তমূলকভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। অনেকে ভেবেছিল আমি ধ্বংস হয়ে যাব। ঈশ্বরের আশীর্বাদে এখনও আছি। মিথ্যা সাক্ষী, মিথ্যা মামলায় জর্জরিত থেকেও আইনে লড়ছি। জীবনযুদ্ধে লড়ছি। সাংবাদিকতা, লেখালিখি, রাজনীতিতে আছি, লড়াই করছি। রাজ্য, কেন্দ্র দুই সরকারের এজেন্সির বিরুদ্ধেই লড়াই চলছে"।
বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেও অসময়ে যাঁরা তাঁর পাশে ছিলেন তাঁদেরকেও স্মরণ করেন নিজের পোস্টের মাধ্যমে। কুণাল ঘোষ লেখেন, "কঠিনতম দিনগুলিতে যে কয়েকজন পাশে ছিল, তাদের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ। আমার এবং আমার ঘনিষ্ঠদের সেদিনের চোখের জল, আর্তনাদ বৃথা যাবে না। সময় তা প্রমাণ করবে। ঈশ্বরের বিচার থেকে ষড়যন্ত্রীরা বাদ যাবে না"।
তিনি আরও লেখেন, "আমি তৃণমূল কংগ্রেস করছি শুধু এটা প্রমাণ করতে যে মন থেকেই দলটা করে এসেছি, আমি একজন সৈনিক এবং কুণাল ঘোষ বেইমান নয়। আমি দলের এমপি, এম এল এ হব না। দলের তরফে জনপ্রতিনিধি হব না। যতদিন ইচ্ছে থাকব সসম্মানে দলের সাংগঠনিক কাজ করব। তারপর জীবন যেভাবে বলবে, সেইভাবে চলব"।
শেষে তাঁর সংযোজন, "গ্রেপ্তারের দিনগুলো এবং আমার ঘাড়ে কলঙ্ক চাপানোর পর্ব ভুলিনি, ভুলব না"। এখানেই প্রশ্ন উঠছে নিজের গ্রেফতারির বর্ষপূর্তি স্মরণ করতে গিয়ে কোথাও দলের বিরুদ্ধেই কথা বলে ফেললেন না তো তৃণমূলের বর্তমান মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ!
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে কুণাল ঘোষকে গ্রেফতার করেছিল বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। তাঁকে যখন প্রিজন ভ্যানে তোলা হচ্ছিল সেই সময় চিৎকার করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধেও সুর চড়িয়েছিলেন তিনি। এছাড়া সিবিআই-র কাছে ৯১ পাতার চিঠিও লিখেছিলেন কুণাল। যেখানে তিনি দাবি করেন, "সারদায় প্রথম সুবিধাভোগী ব্যক্তির নাম মমতা ব্যানার্জি। এটা কোনো টাকা নেওয়ার থেকেও বেশি। উনি টাকা নিয়েছেন কি নেননি, সেটা আমি বলছি না। সরাসরি টাকা নেওয়ার থেকেও সুবিধা নেওয়া কি কম?"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন