সরকার অস্বস্তিতে পড়ে এমন কোনও বেফাঁস প্রশ্ন করা যাবে না বিধানসভায়। এমনটাই দলের বিধায়কদের জানিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস।
শুক্রবার শুরু হয়েছে রাজ্য বিধানসভার বর্ষাকালীন অধিবেশন। আর সেই অধিবেশনের প্রথম দিনই দলের একাধিক বিধায়কদের এ ব্যাপারে সর্তক করা হয়েছে দলের তরফ থেকে। পাশাপাশি আরও বলা হয়েছে যে, শুধু বিধায়কের সম্মান নিলেই হবে না, দায়িত্বও নিতে হবে। এ ছাড়াও দলীয় বিধায়কদের হাজিরাও ব্যাপারেও সর্তক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, অধিবেশন পুরোপুরিভাবে শুরু হওয়ার আগেই পরিষদীয় দলের বৈঠকে সবিস্তারে বেশকিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন দলের সিনিয়র মন্ত্রী এবং উচ্চপদস্থ নেতারা। বেশ কিছু বিধায়ক পরিষদীয় দলের চাঁদা দেন না বলেও বৈঠকে জানানো হয়েছে।
ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে একের পর এক শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে শাসক দলের নেতা-মন্ত্রী-বিধায়কদের। সেই ঘটনার কোনও ব্যাখ্যা যাতে বিধানসভার কার্যবিবরণীতে না থাকে সেই কারণেই কি এই উদ্যোগ?
সূত্রের খবর, শুক্রবার বিধানসভায় শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করার পর নিয়মমাফিক অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যায়। পরবর্তী অধিবেশন বসবে আগামী সোমবার। এদিনের অধিবেশনে কোনও বিজেপি বিধায়ক অংশ নেননি বলেই জানা গেছে।
আরও জানা গেছে, এই অধিবেশনে সরকারের তরফে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অনেকগুলি বিল আনার কথা আছে। তার মধ্যেই থাকবে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানো এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটর পদে শিক্ষামন্ত্রীকে বসানোর জন্য সংশোধনী।
কিন্তু রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে তৃণমূলের তরফে দলের বিধায়কদের শিক্ষা দপ্তর সংক্রান্ত প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে বলা হয়েছে। তবে কী বিরোধীরা যাতে সেই সময় অতিরিক্ত প্রশ্ন করার সুযোগ না পান তাই এই পদক্ষেপ?
এ প্রসঙ্গে দলের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "সরকারি কাজ নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। কিন্তু এমন কোনও প্রশ্ন করবেন না যাতে বাইরে কাজ নিয়ে নেতিবাচক বার্তা যায়।" কিন্তু তিনি সাংবাদিকদের জানান, দলের প্রতি আনুগত্য এবং বিধানসভা এলাকার মানুষের প্রতি মর্যাদা রেখে বিধানসভায় নিয়ম মেনে আচরণ করতে বলা হয়েছে তৃণমূল বিধায়কদের।
অন্যদিকে দলের বিধায়কদের কড়া নির্দেশ দিয়ে অর্থ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, "সব কিছু বলারই একটা ধরণ আছে। দফতর সম্পর্কে এমন কোনও প্রশ্ন করবেন না, যা সভাকক্ষে সরকারকে বিব্রত করে।" তবে কোনও দপ্তরের কাজ নিয়ে যদি কারোর কোনও সংশয় বা প্রশ্ন থাকে তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রীর সাথে আলাদা করে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন চন্দ্রিমা।
এছাড়াও শুক্রবার বিধানসভায় বিধায়কদের হাজিরা প্রসঙ্গে কড়া বার্তা দিয়ে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, "আমাদের বিধায়ক সংখ্যা ২১৭। অথচ কোনও ভোটাভুটিতে দেখা যায় আমরা ভোট পেয়েছি ১৮৪- ১৮৫। কেন এ রকম হবে?"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন