কয়লাপাচার কাণ্ডে সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দিলেন ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক সওকত মোল্লা। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার মোল্লাকে তলব করল সিবিআই। এর আগে তলব এড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এদিন সকাল ১০ঃ৩০ মিনিটে হাজিরা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। বেলা ১১টা নাগাদ সিবিআই দপ্তরে পৌঁছান তিনি।
এর আগে গত ২৭ মে কয়লাপাচার কাণ্ডে সওকত মোল্লাকে তলব করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। কিন্তু তখন প্রশাসনিক কাজ রয়েছে জানিয়ে সিবিআই-এর কাছে চিঠি দিয়ে ১৫ দিন সময় চেয়েছিলেন তিনি। সেই চিঠির ভিত্তিতেই গত ১২ জুন ফের তাঁকে নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।
সিবিআই সূত্র মনে করছে, সওকত মোল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর কয়লাপাচার কাণ্ডে নতুন তথ্য পাওয়া যেতে পারে। কারণ, এর আগে একাধিক জনকে জেরায় করে তাঁর নাম উঠে এসেছে। জানা গেছে, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত কিছু তথ্য পাওয়া গেছে যার সাথে সওকত মোল্লার যোগাযোগ আছে। অর্থাৎ কয়লা মাফিয়াদের মারফত যে মোটা অঙ্কের টাকা কলকাতায় ঢুকত তার সাথে তৃণমূল বিধায়কের নাম জড়িয়েছে। এত মোটা অঙ্কের টাকা কীভাবে এবং কোথা থেকে আসতো তার সত্যতা জানতেই মোল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সিবিআই বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কয়লা-বেল্ট চোরাচালান র্যাকেটের ঘাঁটি ছিল। তদন্তকারী কর্মকর্তারা সম্প্রতি রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গা চিহ্নিত করেছেন যেখানে পাচার করা কয়লা বিভিন্ন সময়ে পাঠানো হয়েছিল।
এটাও রিপোর্ট করা হয় যে, মোল্লার নির্বাচনী এলাকা, ক্যানিং (পূর্ব)-এর অধীনে জীবনতলা এলাকায় বেশ কয়েকটি ইটের ভাটা রয়েছে। যেখানে উৎপাদন চালানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে কয়লা প্রয়োজন। ক্যানিং (পূর্ব) অঞ্চলে এমন অনেক ইট ভাটার সন্ধান সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা পেয়েছেন, যেখানে নিয়মিত চোরাচালান কয়লার সরবরাহ আসছিল।
মোল্লা দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ক্যানিং (পূর্ব) বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের দুই বারের বিধায়ক। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে পালা বদলের আগে, মোল্লা তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল CPI(M)-এর সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং পূর্ববর্তী বামফ্রন্ট শাসনকালে পশ্চিমবঙ্গের ভূমি ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রী আবদুর রেজ্জাক মোল্লার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
২০১১ সালের পর, সওকত মোল্লা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন এবং ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হন। ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তিনি একই আসন থেকে পুনরায় নির্বাচিত হন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন