সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া নির্দেশের পর শহরজুড়ে ফুটপাতের উপরে থাকা হকারদের উচ্ছেদ করতে অ্যাকশন মোডে নেমেছে পুলিশ প্রশাসন। ফুটপাত খালি করতে ভাঙা হচ্ছে অস্থায়ী দোকান। আর এই উচ্ছেদের মধ্যে বেহালায় দেখা গেল এক অন্য চিত্র। বুধবার বেহালার বাকি ফুটপাত দখলমুক্ত করতে বুলডোজার চললেও ভাঙা হয়নি ফুতপাতের উপর থাকা তৃণমূলের কার্যালয়।
বেহালা ম্যানটনে ডায়মন্ডহারবার রোডের পাশে ফুটপাথজুড়ে রয়েছে তৃণমূলের কার্যালয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় যখন জেলের বাইরে ছিলেন তখন প্রায়ই আসতেন ওই কার্যালয়ে। তবে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তিনি গ্রেফতারির পর থেকে বন্ধ রয়েছে ওই কার্যালয়। বুধবার বেহালায় একদিকে যেমন বেআইনিভাবে দখল করা ফুটপাত দখলমুক্ত করতে বুলডোজার চলল, অন্যদিকে দেখা গেল সেই কার্যালয় এখনও একই ভাবে রয়েছে।
অন্যদিকে, ধর্মতলার মোড়ে জহরলাল নেহেরু রোডের পাশের ফুটপাথের একটা বড় অংশজুড়ে রয়েছে হকার্স সুরক্ষা ইউনিয়নের অফিস। রীতিমতো ত্রিপলের মাচা দিয়ে অস্থায়ী অফিসের আকার দেওয়া হয়েছে। সেই অফিসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি থেকে শুরু করে রয়েছে শাসকদলের একাধিক নেতৃত্বের ছবি।
এছাড়া, জহরলাল নেহেরু রোডের পাশেই পিয়ারলেস ইন হোটেলের তলায় একই ভাবে তৈরি হয়েছে হকার্স সুরক্ষা ইউনিয়নের আরও একটি অফিস। ফুটপাত দখল মুক্ত করতে পুলিশের তৎপরতা দেখা গেলেও, হাত পড়েনি এই সব অফিসগুলোতে।
প্রসঙ্গত, সোমবারই নবান্নে পুরসভার চেয়ারম্যান, মেয়রদের নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বৈঠকেই বিধাননগর, কলকাতা সহ একাধিক পুরসভার অধীনে থাকা ফুটপাত দখল নিয়ে সরব হন তিনি। ওই প্রশাসনিক বৈঠকেই দলের নেতা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ফুটপাতে হকার বসানোর অভিযোগ তোলেন তিনি। সোমবার তিনি বলেন, এমন অনেক পুলিশ রয়েছে যারা ঠিক করে কাজ করছে না।
প্রসঙ্গত, বাম আমলের শেষ দিকে পুরসভায় আইন তৈরি করে বলা হয়, ট্রাফিক সিগনালের ৫০ মিটারের মধ্যে কোনও হকার বসতে পারবে না। যদিও তৃণমূল পুরসভায় ক্ষমতায় আসার পর সেই নিয়ম আর কার্যকরী করা হয়নি। এবার সেই নিয়মকেই কার্যকরী করতে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা পুরসভা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন