শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি ঘিরে ইতিমধ্যেই কাঠগড়ায় রাজ্য সরকার। তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি, লাগাতার আক্রমণ শানাচ্ছে বিরোধীরা। চাকরিপ্রার্থীদের ভুয়ো অফার লেটার দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগেও ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
অভিযোগকারীর নাম রুবি সাঁই। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। পাশাপাশি তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (ওয়েবকুপা) সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। ওই সংগঠনের সভাপতি কৃষ্ণকলি বসুর বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন রুবি।
রুবির অভিযোগ, ওয়েবকুপা সভাপতি কৃষ্ণকলি বসু ২০১৭ সালে ডায়মণ্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের সময় ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন। ২০ লক্ষ না দিলেও অন্তত ১৫ লক্ষ দিতেই হবে বলেছিলেন কৃষ্ণকলি। ফোনে রুবি বলেন, ১৫-২০ লক্ষ টাকা দেওয়াটা বড় বিষয় না। বড় বিষয় হল টাকার বিনিময়ে কেন উপাচার্য পদে নিয়োগ করা হবে? রুবির দাবি, পুরো কথোপকথনের রেকর্ডিং রয়েছে তাঁর কাছে।
অধ্যাপক সাঁই-র আরও জানান, পার্থ-অর্পিতার ঘটনাগুলি যখনই প্রকাশ্যে এসেছে তখনই আমার মনে হয়েছে, তাহলে এই ঘটনাই চলতে থাকে। আমি একদমই বুঝতে পারিনি যে এটা একটা বড় সিণ্ডিকেট-চক্র। কৃষ্ণকলি দিদির অত্যন্ত প্রিয় এবং স্নেহভাজন। এরকম যে হতে পারে, আমার মাথাতেই আসেনি। প্রয়োজন হলে কল রেকর্ডিং নিয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখব।
তবে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন কৃষ্ণকলি। তাঁর কথায়, ২০১৭ সালে কী বলেছি, এখন সেটা মনে রাখা অসম্ভব। ৫ বছর পর রুবির এটা মনে হল? তাহলে তখনই কেন প্রতিবাদ করেননি? আমার অনুমতি ছাড়া উনি কি করে কল রেকর্ড করলেন! কৃষ্ণকলির দাবি, এই মিথ্যা অভিযোগের পিছনে নিশ্চয়ই কোনও গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে।
তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালে রুবি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। এই ঘটনার পিছনে বিজেপি এবং সিপিআই(এম)-র প্রত্যক্ষ ভূমিকা থাকতে পারে। ২০১৭ সালে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই সময় ভিসি কোটা থেকে এই নিয়োগ হয়েছিল কিনা খোঁজ নিয়ে দেখুন। কারণ, ওয়েবকুপা কোনও দিন উপাচার্য পদের জন্য সুপারিশ করেননি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন