বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে বিশ্বভারতী সংক্রান্ত এক মামলার শুনানি চলাকালীন এমনই পর্যবেক্ষণ করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি।
মানস মাইতি নামে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক তথা বিজ্ঞানী বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, উপাচার্য অনৈতিকভাবে সিইআরএন নামের একটি প্রকল্প থেকে তাঁকে বাদ দেন। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। মামলাটি ওঠে বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির এজলাসে। আজ মামলার শুনানিতে বিচারপতি গাঙ্গুলি বলেন, বিদ্যুৎ চক্রবর্তী কিভাবে উপাচার্য হলেন? তাঁকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেয়া উচিত। এইভাবে পক্ষপাতমূলক কাজ তিনি করতে পারেন না।
পাশাপাশি তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন, এক সপ্তাহের মধ্যে মানস মাইতিকে পুনরায় সেই প্রকল্পের কাজে নিযুক্ত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০২২ সালে। ওই সময় উপাচার্যের এক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপকরা প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। অধ্যাপকদের ৬ ঘণ্টারও বেশি আটকে রাখা হয়। মানসবাবু পুরো ঘটনার প্রতিবাদ করেন। পুলিশ ডেকে এনে অধ্যাপকদের ছাড়াতে সাহায্য করেন। যার জেরে উপাচার্যের রোষের মুখে পড়তে হয় মানস মাইতিকে। তাঁকে শোকজ করেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। নিজের বিভাগের বদলে অন্য বিভাগের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কারণে শোকজ করা হয়েছিল তাঁকে।
সেই সময় শোকজের নোটিশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান। মামলা ওঠে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। সেখানেও আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়েন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বিচারপতি সিনহা জানিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মানস মাইতির বিরুদ্ধে কোনো কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে না। উপাচার্যের কাজ পক্ষপাতমূলক।
এরপর ফের মানসকে সাসপেন্ড করার জন্য সিইআরএন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন উপাচার্য। কিন্তু সেই সাসপেনশন খারিজ করে দেন বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য। পরে তাঁকে প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। কিন্তু সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হলো বিচারপতি গাঙ্গুলির নির্দেশে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন