দ্রুত নিয়োগ ও বেকার যুবকদের নিয়ে সংকীর্ণ রাজনীতি বন্ধের দাবিতে রাজপথে নামলো চাকরীপ্রার্থীদের ৯ টি সংগঠন। সোমবার শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত ‘মহামিছিল’ করেন চাকরিপ্রার্থীরা। এর জেরে স্তব্ধ যায় কলকাতার রাজপথ। এসএন ব্যানার্জি এবং লেনিন সরণিতে থমকে যায় যান চলাচল। সমস্যায় পড়েন নিত্য যাত্রীরা।
সোমবার, সকাল ১০টা থেকেই শিয়ালদহ চত্বরে জমায়েত হতে থাকেন চাকরীপ্রার্থীরা। সময় গড়ানোর সাথে সাথে বাড়তে থাকে ভিড়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিলে যোগ দেন কয়েক হাজার চাকরীপ্রার্থী।
মিছিলে হাঁটেন শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহার, অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র, আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে এসে আন্দোলনকারীদের সহমর্মিতা জানান সমাজকর্মী তথা চিকিৎসক বিনায়ক সেন ও পদ্মশ্রী প্রাপক শিক্ষক কাজী মাসুম আখতার প্রমুখ। এ দিনের মহামিছিল সামলাতে কার্যত হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে।
টাকার বিনিময়ে চাকরী, মেধাতালিকায় অনিয়ম, চাকরীপ্রার্থীদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভিযোগে একাধিকবার সবর হয়েছে চাকরী প্রার্থীদের বিভিন্ন সংগঠন। আন্দোলন, অনশন, মিছিল সবই হয়েছে পৃথক পৃথক ভাবে। তবে, সোমবারের মিছিল ছিল বঞ্চিত চাকরী প্রার্থীদের ৯ টি সংগঠনের। যেখানে একই শ্লোগান, একই দাবিতে সরব হয়েছেন সকলে।
জানা যাচ্ছে, এদিনের মিছিলে যোগ দেন - রাজ্য গ্রুপ ডি, নার্সিং, প্রাথমিক TET (২০১৪), স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)-এর একাদশ-দ্বাদশ শ্রেনী, শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষা, গ্রুপ সি, স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট (SLST), মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন (MSC), কলেজ সার্ভিস কমিশন (CSC)-র বঞ্চিত মেধাতালিকাভুক্ত চাকরিপ্রার্থীরা।
এদিন, ২০১৮ কলেজ সার্ভিস কমিশন এম্পানেলড ক্যান্ডিডেটস এসোসিয়েশনের প্রতিনিধি মিহির ঘোষ দাবি করেন, 'কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ মেনে স্কুল সার্ভিস ও প্রাথমিক পর্ষদের মত কলেজ সার্ভিস কমিশনেরও প্রত্যেক প্রার্থীর প্রাপ্ত নম্বর প্রকাশ করতে হবে এবং মেধাতালিকায় বঞ্চিত সকল প্রার্থীদের নিয়োগ সুনিশ্চিত করতে হবে।'
যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ (নবম দ্বাদশ)-র প্রতিনিধি মহিদুল ইসলাম জানান, 'ধর্ণা মঞ্চের আজ ৬৪৫ দিন। অর্থের বিনিময়ে অযোগ্য কর্মপ্রার্থীদের যে নিয়োগ হয়েছে তা আপামর জনসাধারনের কাছে জলের মতো পরিষ্কার। দুর্নীতির কারণে বঞ্চিত নবম-দ্বাদশ শ্রেনীর ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রকাশ করা মেধাতালিকাভুক্ত সকল কর্মপ্রার্থীদের অবিলম্বে নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে।'
একইভাবে বঞ্চিত সকল চাকরীপ্রার্থীদের দ্রুত নিয়োগের দাবী তোলেন ২০১৭ গ্রুপ ডি ওয়েটিং ঐক্য মঞ্চ (রাজ্য গ্রুপ ডি)-এর প্রতিনিধি আশিস খামরই, ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রগ্রেসিভ নার্সিং ফোরাম (WBPNF)এর প্রতিনিধি অদিতি মুখার্জি, ২০১৪ টেট পাশ ঐক্য মঞ্চ-এর প্রতিনিধি মনোজ প্রামানিক।
মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন পাস প্রার্থী মঞ্চ-র প্রতিনিধি নবীন চন্দ্র বেরা, SSC গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি ওয়েটিং চাকরীপ্রার্থী মঞ্চ-এর প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ দাস, ২০১৪ টেট উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড ক্যান্ডিডেটস একতা মঞ্চের প্রতিনিধি অচিন্ত ধাড়া ও যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ (শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষা)-এর প্রতিনিধি সেখ সিরাজউদ্দিনও একই দাবি তোলেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন