রাজ্যে প্রথমবার বিজেপি দপ্তরে মহাত্মা গাঁধীর মৃত্যুদিন পালিত হল। পাশাপাশি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৩০ জানুয়ারি গান্ধীজির মৃত্যু দিনটিকে 'বলিদান দিবস’ বলে উল্লেখ করেন। এতদিন দলের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যদিনকেই ‘বলিদান দিবস’ বলে পালন করে এসেছে গেরুয়া শিবির। সুকান্ত বলেন, 'কেন্দ্র গান্ধীজির নির্দেশিত পথে এগোচ্ছে। তাঁর স্বপ্ন সফল করতেই নরেন্দ্র মোদি গ্রামোন্নয়ন, স্বচ্ছ ভারতের মতো প্রকল্প নিয়েছেন।'
হঠাৎ ঘটা করে গান্ধীজির মৃত্যুদিন পালন করা হচ্ছে কেন? এবার তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপির প্রবীণ নেতা, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়। এটা বিজেপির পরম্পরা নয় বলে দাবি করেন তিনি। আর তাতে আরও একবার দলের অস্বস্তি বাড়ল।
তথাগত একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘বিজেপি এখন কী করে, আর না করে, বোঝা যায় না। আমার আমলে এসব হয়নি। এটা দলের পরম্পরা ভঙ্গ বলেই আমার মনে হয়।’ প্রথাভঙ্গ অস্বীকার করেন রাজ্য বিজেপির আর এক প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিংহ। বলেন, ‘গান্ধীজির জন্মজয়ন্তী পালন করলে মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধা জানাতে সমস্যা কোথায়। বিজেপিই একমাত্র, যাঁরা গান্ধীজির দেখানো পথের একমাত্র অনুগামী। অটলবিহারী বাজপেয়ী দলের সভাপতি থাকাকালীন বিজেপির আর্থিক দৃষ্টিভঙ্গী ছিল ‘গান্ধীবাদী সমাজবাদ’। বিজেপির শ্রদ্ধা কোনও দিন কম ছিল না।'
প্রসঙ্গত, ১৯৪৮ সালে গডসের গুলিতে নিহত হন গান্ধীজি। গডসে গেরুয়া শিবিরের সদস্য ছিলেন। এমন অভিযোগে তখন দেশে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর কার্যকলাপ নিসিদ্ধ ঘোষিত হয়েছিল। পরে কেন্দ্র অভিযোগ তুলে নেয়। কিন্তু সঙ্ঘ পরিবার যে গডসের ঘনিষ্ঠ আর তা নিয়ে বিতর্ক, তা রয়ে যায়। পরে বিজেপির বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ ওঠে।
কিন্তু এই হাওয়ার বদল ঘটে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর। গোটা দেশে ২ অক্টোবর গান্ধীজির জন্মজয়ন্তি পালনের কর্মসূচি নেয় বিজেপি। এই দিনে বিজেপি খাদির বস্ত্র কেনার কর্মসূচি পালন করে। তবে রাজ্যে তাঁর মৃত্যুদিন পালন হয়েছে কি না, তা কারওর স্মরণে আসছে না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন