জারি রাজ্যপাল বনাম পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংঘাত। এবার সেই সংঘাত পৌঁছাল দেশের শীর্ষ আদালতে। আটটি বিল আটকে রাখার অভিযোগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল নবান্ন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় রাজ্য সরকারের সেই আবেদন গ্রহণ করেছেন।
শুক্রবার রাজ্যের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে বিষয়টির দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো হয়েছে। রাজ্যের পক্ষ থেকে এই মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী আস্থা শর্মা। অভিযোগ, রাজ্যের উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য সরকারের আনা আট টি বিল আটকে রেখেছেন রাজ্যপাল। তিনি সংবিধানের ২০০ নম্বর বিধি ভঙ্গ করেছেন। যা যেকোনও গণতন্ত্রে সুশাসনের বিরোধী এবং রাজ্যের জনকল্যাণের পরিপন্থী।
জানা গেছে, যে আট টি বিল আটকে রাখা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে নবান্ন, তাঁর মধ্যে ছ’টি বিল পাশ হয়েছিল জগদীপ ধনখড় পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপাল থাকাকালীন এবং বাকি দু’টি পাশ হয়েছে সি ভি আনন্দ বোসের সময়কালে। ২০২২ থেকে রাজভবন ওই বিলগুলি আটকে রেখেছে বলে জানিয়েছে রাজ্য।
যে আটটি বিল নিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে, সেগুলি হল –
১। পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধনী) বিল। যা প্রণীত হয়েছিল ২০২২ সালের ১৩ জুন
২। পশ্চিমবঙ্গ পশু এবং মৎসবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল। প্রণীত হয়েছিল ২০২২ সালের ১৫ জুন
৩। পশ্চিমবঙ্গ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল। যা প্রণীত হয়েছিল ২০২২ সালের ১৪ জুন
৪। পশ্চিমবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (দ্বিতীয় সংশোধনী) বিল। যা প্রণীত হয়েছিল ২০২২ সালের ১৭ জুন
৫। পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল। যা প্রণীত হয়েছিল ২০২২ সালের ২১ জুন
৬। পশ্চিমবঙ্গ আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল। যা প্রণীত হয়েছিল ২০২২ সালের ২৩ জুন
৭। পশ্চিমবঙ্গ নগর পরিকল্পনা এবং নগরোন্নয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল। যা প্রণীত হয়েছিল ২০২৩ সালের ২৮ জুলাই
৮। পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল। যা প্রণীত হয়েছিল ২০২৩ সালের ৪ আগষ্ট।
মামলা দায়ের করে রাজ্য সরকার পুরানো মামলার উদাহরণ টেনেছে। জানানো হয়েছে, এর আগে চার রাজ্যের প্রণীত বিল আটকে রাখার জন্য রাজ্যপালের তীব্র নিন্দা করেছিল শীর্ষ আদালত। তেলেঙ্গনা এবং পাঞ্জাবের রাজ্যপালকে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল অবিলম্বে আটকে রাখা বিল ফেরত পাঠাতে। গত বছর তামিলনাড়ু এবং কেরালার রাজ্যপালেরও সমালোচনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট বিল আটকে রাখার জন্য।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন