বদলে যাচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার নিয়মাবলি। এবার থেকে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে আসতে চলেছে সিমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে ছাত্রছাত্রীদের এই নতুন নিয়মেই পরীক্ষা দিতে হবে বলে জানিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সে সমস্ত পড়ুয়ারা এই বছর ভর্তি হতে চলেছে, তাদের থেকেই বলবৎ হবে এই নয়া নিয়ম।
জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষাকে চারটে ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় সিমেস্টার হবে একাদশ শ্রেণিতে। যেগুলি নেওয়া হবে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। এবং তৃতীয় ও চতুর্থ সিমেস্টার হবে দ্বাদশ শ্রেণিতে। যেগুলো নেবে সংসদ।
জানা গেছে, সর্বভারতীয় স্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতেই এই নিয়ম আনা হয়েছে। সম্প্রতি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি পদে দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেছেন চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। দ্বায়িত্বভার গ্রহনের পর এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার ভাবনায় একটি কমিটি তৈরি করা হয়। সেই কমিটির রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্ত নেয় সংসদ। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে সবিস্তারে জানানো হয় নয়া এই নিয়ম।
নয়া নিয়ম অনুযায়ী –
· প্রথম ও দ্বিতীয় সিমেস্টার হবে একাদশ শ্রেণিতে। যেগুলি নেওয়া হবে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। এবং তৃতীয় ও চতুর্থ সিমেস্টার হবে দ্বাদশ শ্রেণিতে। যেগুলো নেবে সংসদ। তৃতীয় সিমেস্টার আগেই ছাত্রছাত্রীদের অ্যাডমিট কার্ড দিয়ে দেওয়া হবে। সেগুলো নিয়েই তারা অন্য স্কুলে পরীক্ষা দিতে যাবে তৃতীয় ও চতুর্থ সিমেস্টারে। ফাইনাল মার্কশিটে প্রথম ও দ্বিতীয় সিমেস্টারের নম্বর গ্রাহ্য হবে না।
· প্রথম ও তৃতীয় সেমিস্টার হবে নভেম্বর মাসে এবং দ্বিতীয় ও চতুর্থ সেমিস্টার হবে মার্চ মাসে। প্রথম ও তৃতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা এমসিকিউ প্রশ্নে হবে। প্রথম সেমিস্টার স্কুল নিজের মতো করে নেবে। কিন্তু তৃতীয় সেমিস্টার ওএমআর শিটে হবে। খাতা দেখবে কম্পিউটার। আর দ্বিতীয় ও চতুর্থ সিমেস্টার হবে বড় প্রশ্নে।
· দুই শ্রেণিতেই ১০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হবে। প্রজেক্ট বা প্র্যাক্টিক্যালের জন্য ওই ১০০ নম্বরের থেকে ২০ বা ৩০ নম্বর বাদ দিয়ে বাকি ৮০ বা ৭০ নম্বরকে দুই সেমিস্টারে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। ৭০ নম্বরের পরীক্ষার জন্য ৩৫ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্ন ও ৩৫ নম্বরের বড়ো প্রশ্নের পরীক্ষার দিতে হবে। ৮০ নম্বরের ক্ষেত্রে ৪০-৪০ করে ভাগ করা হয়েছে।
· প্রথম তিনটি সিমেস্টারের সময়সীমা হবে দেড় ঘণ্টার। চতুর্থ সিমেস্টারের সময় হবে দু’ঘণ্টা।
· কোনও পড়ুয়া যদি প্রথম সিমেস্টারে কোনও বিষয়ে শূন্য পায়, তা হলে পরের সিমেস্টারে পাশ নম্বর তুলে আনার সুযোগ থাকবে তার কাছে। একাদশ ও দ্বাদশ দুই শ্রেণির ক্ষেত্রেই এই নিয়ম প্রযোজ্য। কিন্তু সংসদ জানিয়েছে, লিখিত পরীক্ষায় পাশ করেও কোনও পড়ুয়া যদি প্রোজেক্ট বা প্র্যাক্টিক্যালে ফেল করে, তা হলে সেই বিষয়টিতে ওই পড়ুয়াকে ফেল বলেই গণ্য করা হবে।
তবে নতুন এই সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিয়ে এখনও কিছু বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন