পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরেও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের প্রার্থী তালিকা থেকে ‘হাওয়া’ হয়ে যায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার ভাঙড়ের ১৯ জন সিপিআইএম প্রার্থীর নাম। ‘বিরোধীশূন্য’ অবস্থায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৯টি আসনেই জিতে যান রাজ্যের শাসকদলের প্রার্থীরা। কমিশনের প্রার্থী তালিকা থেকে উধাও হওয়া ওই প্রার্থীরা নতুন করে নির্বাচনে লড়াইয়ের আর কোনও সুযোগ পাবেন না বলে সোমবার স্পষ্ট জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ওই ১৯জন তৃণমূল প্রার্থীর জয়কেই মান্যতা দিল।
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য জুড়ে অশান্তির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। সেই জেলার ১৯ সিপিআইএম প্রার্থীর অভিযোগ ছিল, মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরেও কী করে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের প্রার্থী তালিকা থেকে তাদের নাম ‘বাদ’ যায়? যেখানে মনোনয়ন স্ক্রুটিনির পরেও তাদের নাম কমিশনের ওয়েবসাইটে ছিল, কিন্তু মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন ফুরিয়ে যাওয়ার পরেই কমিশনের ওয়েবসাইটে থাকা প্রার্থী তালিকা থেকে ১৯ প্রার্থীর নাম উধাও হয়ে যায়। শুধু সিপিআইএম নয়, ভাঙড়ের আইএসএফ প্রার্থীদের সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। এই অভিযোগ নিয়ে কমিশনের বিরুদ্ধে ওই ১৯ প্রার্থী কিছুদিন আগেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংয়ের সিঙ্গেল বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। বিচারপতি অমৃতা সিং আবেদন শুনে কমিশনকে ওই ১৯ জনের নাম প্রার্থী তালিকায় যোগ করে তাদের নতুন করে নির্বাচনে লড়াইয়ের সুযোগ দিতে বলেছিলেন।
কিন্তু কমিশন বিচারপতি অমৃতা সিংয়ের সিঙ্গেল বেঞ্চের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিচারপরি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহার ডিভিশন বেঞ্চের শরণাপন্ন হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে প্রার্থীদের নাম ‘বাতিল’ নিয়ে যুক্তি দেওয়া হয়, সিপিআইএম প্রার্থীদের মনোনয়ন ত্রুটিপূর্ণ ছিল তাই সেই মনোনয়ন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার এই মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহার ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি অমৃতা সিংয়ের নির্দেশকে খারিজ করে দেয়। পাশাপাশি, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যাওয়া ভাঙড়ের ১৯ জন তৃণমূল প্রার্থীর জয়কে মান্যতা দেয় আদালত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন