শনিবার দিনভর পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসের রাজনীতি দেখল গোটা পশ্চিমবঙ্গ। ৮ জুন ভোট ঘোষণার পর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত রাজ্যে প্রাণ হারালেন ৩১ জন। যেখানে শুধু শনিবারই প্রাণ গিয়েছে ১২ জনের। এদিন সকাল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় যেভাবে হিংসা বিরাজ করেছে, সেখানে রাজ্যের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশন ও কমিশনারের ভূমিকা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। এদিন সকাল থেকে নির্বাক থাকার পর অবশেষে বিকেলে মুখ খুললেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা।
শনিবার ভোট শুরুর প্রায় ৩ ঘণ্টা পর দফতরে আসেন কমিশনার রাজীব সিনহা। প্রথমে তাঁর দফতরের সামনে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের প্রশ্ন ‘ডোন্ট কেয়ার’ ভাবে এড়িয়ে গেলেও বেলা গড়াতেই মুখ খুললেন রাজীব। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, “কোথাও অপরাধ হলে প্রথমে মামলা হয়। তারপর তদন্ত ও সেই অনুযায়ী গ্রেফতারি। আশা করি পুলিশ এই নিয়ে ব্যবস্থা নেবে।”
কিন্তু সারাদিন ধরে রাজ্য জুড়ে এই সন্ত্রাসের যা ঘটনা ঘটছে, তা কি আদৌও কমিশনের কান পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে? রাজীব এ নিয়ে বললেন, “ঘন ঘন অভিযোগ আসছে আমাদের কাছে। এই বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও পরিসংখ্যান দেওয়া সম্ভব নয়। তবে প্রায় ৬০০-এর মতো অভিযোগ আমরা পেয়েছি। কমিশন তার সমাধানও করছে। এটা তো অপরাধ। অপরাধের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করবে, তদন্ত করবে। আশা করি, পুলিশ তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করবে। আমরা সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছি, যাতে ভোটারেরা ভোট দিতে পারেন।” পাশাপাশি, ভোট শেষ হয়ে গেলেও এই নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত হবে বলেই জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার সারাদিন ধরে গোটা রাজ্য জুড়ে এত সন্ত্রাসের ছবি ধরা পড়েছে, তার পরেও শাসকদল তৃণমূলের পক্ষ থেকে এদিনের ভোটকে ‘মোটামুটি শান্তিপূর্ণ’ বলেই দাবি করা হয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনারও কি তাই মনে করেন? তিনি এ নিয়ে বললেন, “অশান্তি, গণ্ডগোলের অসংখ্য খবর সামনে এসেছে। মানুষ নিজের মতামতের নিরিখে অভিযোগ করেছে। প্রত্যেকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। আজ সব কিছু যে শান্তিপূর্ণ হয়েছে তা বলা যায় না, আবার শুধু যে অশান্তিই হয়েছে তাও বলা যায় না।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন