তৃণমূলের মনোনয়ন জমার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁর মতে, বিধি নিয়ম না মেনে, হোম ডেলিভারি-র মতো ব্যবস্থা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সামনে সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা জানিয়েছেন মহম্মদ সেলিম।
এদিনের সভায় সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জানান, স্ক্রুটিনিতে এই বেনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন বামপন্থীরা। নির্বাচন কমিশনকে রাজ্য সরকারের হাতের পুতুল বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘‘কোন ম্যাজিকে তৃণমূলের হাজার হাজার মনোনয়ন মুহূর্তের মধ্যে জমা হয়ে গেল? প্রতিটি মনোনয়ন পত্র জমায় কত সেকেন্ড লাগল?’’
এদিন মহম্মদ সেলিম আরও বলেন, বিরোধীদের ডিসিআর কাটতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে নাকাল হয়েছেন বিরোধীরা। সেখানে ম্যাজিকের মত তৃণমূলের মনোনয়ন জমা পড়েছে হাজারে হাজারে।
পুরো ব্যবস্থায় গুরুতর বেনিয়মের অভিযোগ তুলে মহম্মদ সেলিম জানান, ‘‘চ্যালেঞ্জ করে বলছি মনোনয়ন প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়নি। মনোনয়ন পত্র স্ক্রুটিনির পর্বে কমিশনে সেই প্রশ্ন তুলবেন বামপন্থীরা। আদালতে গেলেও স্পষ্ট হয়ে যাবে এই বেনিয়ম।”
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রত্যেক প্রার্থীকে ব্লক অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় নথি এবং টাকা জমা দিয়ে নিতে হবে ‘ডিসিআর’। এরপর সেই ডিসিআর দেখিয়ে দাখিল করতে হবে মনোনয়ন। নির্দেশ মত প্রত্যেক ব্লক অফিসে এই মনোনয়ন প্রক্রিয়া সিসিটিভি-তে ধরে রাখতে হবে।
এদিন সিপিআইএম নেতা আরও বলেন, ‘‘তৃণমূলের মনোনয়ন এত কম সময়ে কীভাবে জমা পড়লো তা অঙ্কের হিসেবে ব্যাখ্যা দিতে হবে। তাঁর মতে, পরীক্ষা করলেই দেখা যাবে যে, মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়েছে আগে, এরপর কাটা হয়েছে ডিসিআর।
রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘চাকরির পরীক্ষায় যেমন ফাঁকা ওএমআর শিট দেখা গিয়েছিল, এখানেও দেখা যাবে এমন বেনিয়ম।’ আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, নির্বাচনী লড়াইয়ে আইপ্যাকের মতো পেশাদারি সংস্থাকে দিয়ে মনোনয়ন পত্র হোম ডেলিভারির মতো বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
নিয়ম অনুসারে প্রত্যেক প্রার্থীকে ব্লক দপ্তরে গিয়ে মনোনয়ন দাখিল করতে হয়। যদিও সিপিআইএম-এর অভিযোগ, মনোনয়নের পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের প্রার্থীদের দেখা যায়নি। শেষ দু’দিনে গোছা গোছা মনোনয়ন জমার হিসেব দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে ঘোষিত প্রার্থীকে ঘিরে তুমুল অন্তর্দ্বন্দ্ব ঠেকাতেই তৃণমূল প্রার্থীর নাম ঘোষণা পিছিয়ে দিয়েছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন