'দায়িত্ব পালন করতে না পারলে পদত্যাগ করুন', নির্বাচন কমিশনারকে তীব্র ভর্ৎসনা হাইকোর্টের

প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ এদিন স্পষ্ট জানায়, ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটে যে সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন করা হয়েছিল, ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে তার থেকে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনারকে তীব্র ভর্ৎসনা হাইকোর্টের
নির্বাচন কমিশনারকে তীব্র ভর্ৎসনা হাইকোর্টের
Published on

'দায়িত্ব পালন করতে না পারলে পদত্যাগ করুন। রাজ্যপাল নতুন কমিশনার নিয়োগ করবেন।' বর্তমান রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে ঠিক এই ভাষায় ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সমস্ত জেলার জন্য পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে আবেদন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনারকে।

কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বিরোধীদের দায়ের করা মামলার শুনানি ছিল আজ। সেই মামলায় ফের একবার কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খেল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কমিশনের ভূমিকায় চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ আদালত। নির্বাচন কমিশনারকে তীব্র ভর্ৎসনা করে মামলার শুরুতেই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘বলতে বাধ্য হচ্ছি এত কিছুর পরে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, কমিশনারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করতে হচ্ছে। ২০১৩ সালে এই কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিল। আমরা বুঝতে পারছি না সেই কমিশনের স্বতন্ত্রটার কী হল?’’

আদালত বলে, "হাইকোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দেওয়া হয়নি। কমিশন সক্রিয় নয়, তাই কোর্টের নির্দেশ মানতে উৎসাহ দেখাচ্ছে না। আমরা কমিশনের উপরেই বাহিনী মূল্যায়নের ভার ছেড়েছিলাম। ১৭০০ না ৮ লক্ষ বাহিনী লাগবে সেটা ঠিক করা কি আদালতের কাজ?"

প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ এদিন স্পষ্ট জানায়, ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটে যে সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন করা হয়েছিল, ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে তার থেকে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন করতে হবে। কারণ এবার একদফায় নির্বাচন। ২০১৩ সালে ৫ দফায় ভোট হয়েছিল এবং ৮২৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন স্পর্শকাতর ৭ জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। ৪৮ ঘণ্টা পরেও কমিশন স্পর্শকাতর জায়গা চিহ্নিত কোর্টে পারেনি। এরপর ১৫ জুন হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, গোটা রাজ্যে কেন্দ্রীয়বাহিনীর নজরদারিতেই পঞ্চায়েত ভোট করাতে হবে। শুধু তাই নয়, এই নির্দেশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্রের কাছে বাহিনী চাইতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়ার পরিবর্তে হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কমিশন। সেখানেও ধাক্কা খায় কমিশন। হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখে শীর্ষ আদালত। এরপরই গোটা রাজ্যের ২২ জেলার জন্য মোট ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর আবেদন জানায় কমিশন।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in