আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ছাত্র সমাজ নামের একটি সংগঠন। এই মিছিলে মহিলা এবং ছাত্রদের সামনে রেখে আড়াল থেকে অশান্তি করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তথাকথিত ‘ছাত্র সমাজ’ ওই কর্মসূচির ডাক দিলেও এর নেপথ্যে অন্য চক্রান্তের ইঙ্গিত পাচ্ছে পুলিশ। বেশ কিছু ঘটনায় তাদের সেই ধারণা আরও দৃঢ় হয়েছে। এই নবান্ন অভিযানের অনুমতি দেয়নি রাজ্য পুলিশ।
সোমবার বেলা ১১টায় নবান্ন অভিযান নিয়ে চক্রান্তের অভিযোগ এনে দুটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। এরপর বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্য পুলিশের তরফে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ বর্মা এবং এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। বৈঠকে এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম বলেন, ‘‘নবান্নের ওই অভিযানে মহিলা এবং ছাত্রদের সামনে রেখে পিছন থেকে অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি করা হতে পারে বলে খবর পেয়েছি আমরা। পুলিশকে বলপ্রয়োগে উস্কানি দিতেই এটা করা হবে।’’
সুপ্রতিম আরও বলেন, ‘‘আমাদের কাছে খবর রয়েছে, নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া ছাত্র সমাজের এক প্রতিনিধি রবিবারই কলকাতার এক বিলাসবহুল হোটেলে গিয়ে এক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা করেছেন।’’
নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে যে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজ’, তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রতিম। কারণ পুলিশ খোঁজ নিয়ে জেনেছে, 'পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজ' নামে কোনো সংগঠন নেই। এই ব্যাপারে সুপ্রতিম জানিয়েছেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি, আগামীকাল সংগ্রামী যৌথমঞ্চও (সরকারী কর্মচারীদের একটি সংগঠন) নাকি এই ছাত্র সমাজের অভিযানকে সমর্থন করে পথে নামবে। আমরা খবর পেয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। কিন্তু তারা আমাদের কিছু জানায়নি।’’
যদিও পুলিশের অভিযোগকে মিথ্যে বলে জানিয়েছে সংগ্রামী যৌথমঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ। এক সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ মিথ্যাচার করছে। সোমবার সকালেই আমরা রাজ্য প্রশাসনকে মেল মারফত জানিয়েছি। যৌথমঞ্চ-সহ আরও দু’টি সংগঠন মঙ্গলবার হাওড়া স্টেশনের বাইরে জমায়েত করবে। ফরশোর রোড ধরে আমরা নবান্নের দিকে যাব। রাত ৮টা পর্যন্ত নবান্নের সামনে সভা করব।’’
অন্যদিকে, এব্যাপারে রাজ্যপুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ বলেন, ‘‘রাজ্যের এত জায়গায় এত আন্দোলন, মিছিল হচ্ছে। পুলিশ তাদের সহযোগিতাই করছে। কিন্তু নবান্ন সংরক্ষিত এলাকা। এর আশপাশে ১৪৪ ধারা অর্থাৎ বর্তমান আইনের ১৬৩ ধারা জারি করা থাকে। যার অর্থ ওই এলাকায় পাঁচ জনের বেশি জমায়েত সম্ভব নয়। তা ছাড়া যাঁরা ওই আন্দোলন কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন, তাঁরা আগাম অনুমতি নেননি। সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে জানিয়েছেন। তাই ওই মিছিল বেআইনি। আমরা অন্য যে কোনও জায়গায় মিছিলে সহয়তা করতে পারি, কিন্তু নবান্নে এই ধরনের মিছিলে সাহায্য করতে পারব না।’’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন