ওয়েস্ট বেঙ্গল স্কুল সার্ভিস কমিশন (WBSSC) নিয়োগ কেলেঙ্কারির তদন্তের সময় অর্পিতা মুখার্জির বিরুদ্ধে আরও কিছু তথ্য পাওয়া গেল। জানা গেছে, অর্পিতা মুখার্জি অন্য একজনের সাথে দুটি সংস্থার পরিচালক ছিলেন এবং হয়তো এই দুই সংস্থার মাধ্যমে অন্যত্র টাকা সরানো হয়েছে।
দুটি কোম্পানির পরিচালকই একই ব্যক্তি। যদিও কোম্পানী দুটি আলাদা আলাদা ঠিকানায় নিবন্ধিত। এই দুই কোম্পানির সাথে বহু কোটি টাকা কেলেঙ্কারির সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই দুই সংস্থার নাম সেন্ট্রি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড এবং ইচ্ছে এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড। দুই সংস্থারই ডিরেক্টর যথাক্রমে অর্পিতা মুখার্জি এবং কল্যাণ ধর নামে দুজন।
এই WBSSC কেলেঙ্কারিতে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জির ঘনিষ্ঠ আস্থাভাজন এবং সহযোগী অর্পিতা মুখার্জির বাসভবনে তল্লাশি অভিযানের সময় ED গোয়েন্দারা দুটি কোম্পানির বিক্রয় দলিল উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি এবং অর্পিতা মুখার্জি দুজনেই ইডি হেফাজতে রয়েছেন।
ইডি দক্ষিণ কলকাতার পশ ডায়মন্ড সিটি কমপ্লেক্সে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ভারতীয় এবং বিদেশী মুদ্রা, সোনার অলঙ্কার, একাধিক উচ্চ প্রযুক্তির অ্যাপল আইফোন, একাধিক ফ্ল্যাটের বিক্রয় দলিল উদ্ধার করেছে। এছাড়াও বেশ কিছু দামী যানবাহনের নথি বাজেয়াপ্ত করেছে। ওই অভিযানের সময় সেন্ট্রি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড এবং ইচ্ছা এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে এই দুটি সংস্থার বিক্রয় দলিল উদ্ধার করেছে ইডি।
ইডি সূত্র জানিয়েছে, দুই সংস্থার মধ্যে সেন্ট্রি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডের নিবন্ধিত অফিস হল ডায়মন্ড সিটি সাউথ, টাওয়ার-২, ফ্ল্যাট নং-১এ, ১ম তলা, কলকাতা- পশ্চিমবঙ্গ ৭০০০৪১। উল্লেখ্য, এই হাউজিং কমপ্লেক্সেই অর্পিতা মুখার্জি থাকেন।
অন্যদিকে, ইচ্ছে এন্টারটেনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড-এর নিবন্ধিত অফিস হল ৯৫, রাজডাঙ্গা মেইন রোড, এলপি-১০৭/৪৩৯/৭৮, কলকাতা – ৭০০০১৭।
ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এই দুটি সংস্থাই ভুয়ো এবং WBSSC কেলেঙ্কারির টাকা এই দুই সংস্থার মাধ্যমে অন্যত্র সরানো হয়েছে। ইডি বর্তমানে এই দুই সংস্থার দ্বিতীয় পরিচালক কল্যাণ ধরকে খুঁজছে। এক ইডি আধিকারিক জানিয়েছেন, "একবার আমরা তাকে পেয়ে গেলে, এই দুই কোম্পানি সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র পাওয়া যাবে এবং কীভাবে তাঁরা বিভিন্ন উপায়ে অবৈধ অর্থ এই দুই সংস্থার মাধ্যমে সরিয়েছে তা জানা যাবে।"
অন্যদিকে, মঙ্গলবার সকালে ইডি আধিকারিকরা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ভুবনেশ্বর থেকে কলকাতায় ফিরিয়ে এনেছেন। তাঁকে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সংস্থার অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও সেখানে রয়েছেন এবং ইডি তদন্তকারী আধিকারিকরা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাঁদের মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করার পরিকল্পনা করছেন বলে জানা গেছে।
সোমবার সন্ধ্যায় কলকাতার পাবলিক মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের (পিএমএলএ) বিশেষ আদালত পার্থ চ্যাটার্জী এবং অর্পিতা মুখার্জি - দুজনকেই ৩ আগস্ট পর্যন্ত ইডি হেফাজতে পাঠিয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন