টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর দীর্ঘ ৮ বছর কেটে গেলেও এখনও মেলেনি চাকরি। গত দেড় বছরের বেশি সময় রাস্তাকেই আন্দোলন মঞ্চ বানিয়ে লড়াই চালাচ্ছেন তাঁরা। দিনের পর দিন বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন বলে দাবি ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের। আবারও আন্দোলনকেই হাতিয়ার বানিয়ে চাকরির দাবিতে পথে নামলেন টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীরা। যার জেরে সোমবার উত্তাল হল সল্টলেকের করুণাময়ী চত্বর। এই খবর লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
সোমবার সল্টলেকের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সদর দপ্তর এপিজে ভবনের সামনে শুয়ে পড়ে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখালেন হাজার হাজার টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের একটাই দাবি, "চুরি হওয়া চাকরি ফেরত চাই।" পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামে RAF। যার ফলে চাকরিপ্রার্থীদের সাথে কার্যত ধস্তাধস্তি শুরু হয় পুলিশের।
ধুন্ধুমার পরিস্থিতি এবং দুপুরের অতিরিক্ত রোদের গরম সহ্য করতে না পেরে ঘটনাস্থলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী। কিন্তু তাও থেমে থাকেনি বিক্ষোভ, আন্দোলন। পুলিশ এসে ধরপাকড় শুরু করে। বেশ কয়েকজনকে বলপূর্বক প্রিজনভ্যানে তোলে পুলিশ।
সূত্রের খবর, বেশ কিছু অসুস্থ চাকরিপ্রার্থীদের পুলিশের গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্যদিকে, এপিসি ভবনে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার জন্য ৪ জন চাকরিপ্রার্থীকে ছাড় দেওয়া হয়। নিয়োগ না হলে আমরণ অনশনের হুমকি দিয়েছেন তাঁরা। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এপিজে ভবনের সামনে এখনও বিক্ষোভরত চাকরিপ্রার্থীরা। অন্ধকার হয়ে আসায় মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বেলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা।
বিক্ষোভস্থল থেকে চাকরিপ্রার্থীদের একজন জানান, "আমরা ২০১৪ সালের টেট পাশ করা প্রশিক্ষিত নন ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থী। মানিক ভট্টাচার্য পাহাড়সম দুর্নীতি করে আমাদের জীবন্ত লাশ হিসেবে কফিনে ভরে রেখে গেছেন। আর সেই কফিনে শেষ পেরেকটা পুঁতে যাচ্ছেন গৌতমবাবু। কিন্তু আমরা সেটা হতে দেব না। আমরা ওয়েটিং-এ আছি, গৌতমবাবু চাইছেন আমাদের প্যানেল থেকেই বের করে দিতে। সেইজন্য ২০১৭ সালে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের সাথে আমাদের ইন্টারভিউতে বসাতে চাইছেন। কিন্তু আমরা আর এই বঞ্চনা মেনে নেব না।"
তিনি আরও বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আমরা দ্বিতীয় ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম। উনি বলেছিলেন ২০ হাজার নিয়োগ হবে। কিন্তু আমরা RTI করে জানতে পেরেছি মাত্র ১৩ হাজার নিয়োগ হয়েছে। বাকি ৭ হাজার নিয়োগ এখনও হয়নি।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন