প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে মঙ্গলবার ভোরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট)-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন নদীয়ার পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। মঙ্গলবারই তাঁকে পেশ করা হবে আদালতে। তবে ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাঁর মোবাইল ফোন। সেটি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করার পর বেশকিছু সন্দেহজনক তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দা আধিকারিকরা।
ইডি সূত্রের খবর, 'আর কে' নামের কোনও এক ব্যক্তির সাথে দীর্ঘদিন ধরে কথোপকথনের প্রমাণ পাওয়া গেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির ফোনে। হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটেও মিলেছে একাধিক গরমিল। যার জেরে মানিককে আরও সন্দেহ করতে শুরু করেন গোয়েন্দারা। অবশেষে সোমবার গভীর রাতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি দপ্তরে ডেকে পাঠানো হয়। দীর্ঘক্ষণের জেরায় মানিকের বয়ানে একাধিক অসংগতি মেলায় তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি।
কে এই 'আর কে'? হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটেই বা কি ধরণের গড়মিল পেল ইডি? রহস্যজনক এই ব্যক্তির পুরো নাম এখনও পর্যন্ত জানতে পারেননি গোয়েন্দারা। তবে ইডি আধিকারিকদের অভিযোগ, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে যখন তখন ফেঁসে যেতে পারেন বুঝতে পেরে নিজের ফোন থেকে বেশিরভাগ চ্যাট ডিলিট করে ফেলেছেন তৃণমূল বিধায়ক। তবে 'আর কে' নামের সেই অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির নম্বর মানিকের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকেই পেয়েছে ইডি।
তাদের দাবি, একাধিকবার ওই ব্যক্তির সাথে দীর্ঘক্ষণ কথোপকথন হত মানিকের। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দপ্তরে চাকরিপ্রার্থীদের যে চূড়ান্ত তালিকা তুলে দিয়েছিল মানিক, তার বেশ কিছু নথি ছিল মানিকের ফোনের হোয়াটসঅ্যাপে 'আর কে' নামে সেভ করা চ্যাটে।
তবে চাকরিপ্রার্থীদের তালিকার হদিশ জানেন না বলেই দাবি করেছেন মানিক বাবু। কিন্তু তা মানতে নারাজ ইডি। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রের খবর, হোয়াটসঅ্যাপে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাথেও কথা হত মানিকের। কিন্তু সেই কথোপকথনের সমস্ত রেকর্ড উধাও! কি কি কথা হত তাঁদের, সেই বিষয়ে জানতে মরিয়া ইডি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন