কসবার ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের পর এক মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও কোভিশিল্ড বা স্পুটনিকের লেভেল লাগানো যে ভায়াল দেবাঞ্জন দেবের অফিস থেকে পাওয়া গিয়েছে, তা আসলে কি, সেই সম্পর্কে এখনও ধোঁয়াশায় লালবাজারের গোয়েন্দারা।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে রাজ্য সরকার কলকাতা হাইকোর্টে যে হলফনামা পেশ করেছে তাতে একদিকে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ভায়ালে কোভিশিল্ড, স্পুটনিকের লেভেল লাগানো থাকলেও কোভিশিল্ড, স্পুটনিক, কোভ্যাকসিনের কোনওটাই দেওয়া হয়নি। ভায়ালে ছিল অ্যামিকাসিনের মতো অ্যান্টিবায়োটিক। ছিল ট্রায়ামলিনোলোম অ্যাসিটোনাইড। এসবে সুস্থ শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ফরেনসিক রিপোর্টকে ভিত্তি করেই এমন দাবি করেছিল পুলিশ। অন্যদিকে, সেই হলফনামাতে এটাও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ভায়ালে কী ধরনের তরল ছিল, তা জানতে নাইসেডে নমুনা পাঠানো হয়েছে।
প্রধান অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের অবাধ বিচরণ ছিল রাজনৈতিক মহলে। তার পরিচয় ছিল তৃণমূলের উঁচুস্তরের নেতা মন্ত্রীদের সঙ্গেও। তার এই ঘটনাকে নিছকই এক ব্যক্তির জালিয়াতির ঘটনা বলে দেখা হচ্ছে। শাসকদল তৃণমূলকে আড়াল করতে প্রতারণার ঘটনা বলে তদন্ত প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে? উঠছে সেই প্রশ্নও। প্রতারকের ভুয়ো অফিসে ভোটের আগে কীভাবে ভোটার তালিকার নাম সংযোজন, বিয়োজন, স্কুটিনি হত, তা নিয়েও মাথা ঘামাচ্ছেন না গোয়েন্দারা। তার অফিসের গাড়ি চালক মিঠুন দেবনাথ এই ব্যাপারে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করলেও তাকে জেরা করা হয়নি। এখন লক্ষ্যই হল কসবা এবং সিটি কলেজে যে টিকাকরণ হয়েছে, তাকে ভুয়ো বলে দেগে দেওয়া।
ওই ঘটনার পর একের পর এক ভুয়ো আইএএস অফিসার, পুলিশ, সিআইডি প্রতারণার ঘটনা সামনে আসছে। ক্রমশ যেন পিছিয়ে পড়ছে দেবাঞ্জন দেবকে নিয়ে তদন্ত। তবে দেবাঞ্জনের তদন্ত যে কোনওমতেই তৃণমূলকে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবাঞ্জনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করতে চাইছেন গোয়েন্দারা। ভ্যাকসিন কাণ্ডে আর্থিক দুর্নীতির দিক তদন্ত করছেন তাঁরা। বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট প্রচুর টাকা পাচার করা হয়েছে। কীভাবে এতগুলো ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলল দেবাঞ্জন, তা দেখতে চাইছে ইডি। যদিও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের পক্ষ থেকে সেরকম তৎপরতা দেখা যায়নি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন