অনবরত বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের একের পর এক নদী ফুঁসছে। তিস্তা, জলঢাকা সহ একাধিক নদীর জল বিপদসীমায় বইছে। প্রবল বন্যার কবলে পড়েছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। উদ্ধারকাজে নেমেছে বায়ুসেনা।
আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ির বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাটে বাঙরি নদীতে হড়পা বানে রুহিনাথ ওরাওঁ নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আবার ছোটোপুকুরিয়ার অর্জুনপাড়ায় বামনি নদীর জলে ভেসে যান লালো নাগাসিয়া নামে বছর ৭৫-র এক বৃদ্ধা। আরও এক ব্যক্তির নিখোঁজ হওয়ার খবর সামনে আসছে।
আবার জলপাইগুড়ির বিন্নাগুড়ি, গয়েরকাটা, ময়নাগুড়ি সহ একাধিক জায়গা জলের তলায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। প্রচুর মানুষকে ওই স্থানগুলি থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সেচ দফতর জানিয়েছে, প্রশাসন তৎপর রয়েছে। উদ্ধারকার্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে এনডিআরএফ ও সেনাবাহিনী। বায়ুসেনার তরফ থেকে হেলিকপ্টারও রাখা হয়েছে। গোবরজ্যোতি নদীর জলে ৪৮ নম্বর এশিয়ান হাইওয়ের পঞ্চাশ মিটার অংশ ভেসে গেছে। যার জেরে ভারত ও ভুটানের মধ্যে সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। বৃষ্টি না কমলে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত করা সম্ভব নয়। কালজানি, তিস্তা এবং তোর্সা নদীতে হলুদ সঙ্কেত জারি করা হয়েছে।
উত্তরবঙ্গের চেহারাটা ভয়াবহ হলেও দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির দেখা নেই। তবে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহের শেষেই ভারী বৃষ্টিতে ভিজতে পারে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি। তার কারণ হলো জোড়া ঘূর্ণাবর্ত। রবিবার থেকে দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা এবং কলকাতায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া দফতর আরও জানিয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হচ্ছে। আগামী রবিবার উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে। পরে শক্তি বৃদ্ধি করে তা নিম্নচাপে পরিণত হবে। উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে আগামী ৪৮ ঘন্টা লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন