১২ দফা দাবিতে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ শুরু করেছে আদিবাসী সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহল। ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর - মূলত আদিবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলিতে ১২ ঘন্টার চাক্কা জ্যাম কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এর জেরে রীতিমতো ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের।
বুধবার সকাল ৬টা থেকে পথ অবরোধ শুরু করেছে আদিবাসী সংগঠন। ধামসা-মাদল নিয়ে পুরুলিয়ার সাঁতুড়ি ব্লকের বেনাগড়িয়া, মানবাজারের সিধু কানুহু মোড়, হুড়া ব্লকের লালপুরে নিজেদের দাবি সামনে রেখে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরের হাতিবাড়ি মোড়, খড়িকামাথানি, ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের একাধিক এলাকায় রাস্তায় বসে অবরোধ করছেন আদিবাসীরা। এছাড়া পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর, কেশপুর, গড়বেতা, ডেবরা, চন্দ্রকোণাতেও অবরোধ চলছে। বাঁকুড়া-রানিগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর বড়জুড়ি, হেভির মোড়-সহ একাধিক এলাকা অবরুদ্ধ হয়ে আছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিক্ষোভে।
তাঁদের মূল দাবিগুলি হলো - রাজ্যের প্রতিটি জেলায় সাঁওতালি ভাষায় কলেজ চালু করতে হবে, সাঁওতালি মাধ্যমের স্কুলে দ্রুত স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ, সাঁওতালি মাধ্যমের স্কুলে প্রতিটি বিষয়ের শিক্ষক ও বই প্রদান করা, ভলেন্টরি শিক্ষকদের পার্শ্বশিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত করা।
পাশপাশি তাঁরা আরও দাবি করছেন, প্রতিটি ব্লকে সাঁওতালি মাধ্যমের উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় চালু করতে হবে, বন্ধ থাকা আদিবাসী হস্টেল পুনরায় চালু করা, দেউচা পাচামিতে খোলামুখ কয়লা খনি তৈরির জন্য আদিবাসীদের উচ্ছেদ না করা, দ্রুত ভুয়ো উপজাতি শংসাপত্র প্রাপকদের চিহ্নিত করে তাঁদের শংসাপত্র বাতিল করতে হবে। সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ে সাঁওতালি মাধ্যমেই স্নাতকোত্তর কোর্স শুরু করতে হবে। সাথে শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সাঁওতালি বোর্ড গঠন করতে হবে সরকারকে।
আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, ১৪ বছর আগে সাঁওতালি মাধ্যমে পড়াশোনা চালু হয়। কিন্তু এতদিন পরেও সাঁওতালি শিক্ষার জন্য বোর্ড নেই। শিক্ষকের অভাব রয়েছে। এইগুলোকে পূরণ করতে হবে সরকারকে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নিজেদের তফশিলি উপজাতিতে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে সরব হয়েছিলেন কুড়মি ও মাহাতো সম্প্রদায়ের মানুষেরা। বাংলা-ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডে ‘রেল রোকো’ কর্মসূচি নিয়েছিলেন তাঁরা। পাশাপাশি ঐসব অঞ্চলের একাধিক রাস্তাও অবরোধ করেছিলেন।
দীর্ঘদিন ধরে ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলের কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই দাবিতে আন্দোলন করছেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন, সরকারের উচিত তাঁদের দিকে দৃষ্টিপাত করা। বহু সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই অবিলম্বে তাঁদের নাম তফশিলি উপজাতি হিসেবে নথিভুক্ত করতে হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন