১০০ দিনের কাজে ২০০ কোটি টাকার দুর্নীতি অভিযোগ। ঘটনাস্থল পশ্চিমবঙ্গের পাঁচ জেলা। রাজ্যে রেগার দুর্নীতি তদন্তে কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রামোন্নয়ন দফতর একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে। বাঁকুড়া, উত্তরদিনাজপুর, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও আলিপুরদুয়ার জেলায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত শেষে করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের পঞ্চায়েত ব্যবস্থার সঙ্গেই যুক্ত কর্মচারীদের বক্তব্য, এই দুর্নীতি হিমশৈলের চূড়ার মতোই। কেন্দ্রে তদন্তকারী দলের এক সদস্যের কথায়, জেলা প্রশাসন থেকে তদন্তের ক্ষেত্রে কোনও সহযোগিতা পাচ্ছেন না। এই অসহযোগিতার প্রমাণ পেয়ে রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব ও পঞ্চায়েত দফতরের প্রধান সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অডিট সংক্রান্ত তদন্তের জন্য রাজ্য প্রশাসনের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি কোনও প্রয়োজন হয় না। কিন্তু তাদের সহযোগিতার জন্য তারা সাহায্য চেয়েছিল।
গতবছর বাঁকুড়ায় রেগার কাজে ব্যাপক পরিমাণে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। আইসিডিএস প্রকল্পের শিশুদের প্রত্যেক পরিবারের হাতে ১০টি করে পেঁপে গাছের চারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ৬টি লেবু গাছের চারার সঙ্গে ৪টি করে পেঁপে গাছের চারা দেওয়ার জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ১০ হাজার ৬৭১ টাকা। যে চারাই দেওয়া হোক না কেন, সরকারের বরাদ্দ ছিল ১০৬৭ টাকা।
রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের দুর্নীতির নতুন কিছু নয়। এর আগেও কেন্দ্র থেকে তদন্তকারী কমিটি এসে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করে গিয়েছে। কিন্তু রাজ্যে এসে শেষ পর্যন্ত বোঝাপড়া করে ফিরে গিয়েছে ন্যাশনাল লেবেল মনিটরিং কমিটি, এমনই অভিযোগ। তাই এবার এই তদন্তে এসেছেন কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকরা।
২০০ কোটি টাকা দুর্নীতির মূলে রয়েছে ১০০ দিনের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার খরচের বিষয়টি। যেমন চারাগাছের সঙ্গে বৃক্ষরোপণের জন্য প্রয়োজন বাঁশের বেড়া, সার-সহ আরও নানা সামগ্রী। এই সামগ্রী কিনতে হয় বাৎসরিক টেন্ডারের ভিত্তিতে। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতর দুর্নীতির তদন্ত করছে।
এছাড়াও ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ আগেও এসেছে। করোনা মহামারীতে লকডাউন লক্ষ লক্ষ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছেন। তখন ভুয়ো জব কার্ডের বানিয়ে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। তবুও দেশের মধ্যে সেরা হয়েছে রাজ্য।
১০ তারিখের মধ্যে তদন্তের কাজ শেষ করতে হবে। প্রতিটি জেলায় চার দিনে তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১৬ তারিখের মধ্যে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতরে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন