২১শে জুলাই: 'ভুয়ো ভিডিও' পোস্ট করার পর ডিলিট! তদন্ত রিপোর্ট কোথায়? তৃণমূলকে পাল্টা সুজনের

এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যথেষ্ট বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। চাপের মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে নিজেদের পেজ থেকে ভিডিওটি ডিলিট করে ফেলেছে তৃণমূল।
২১শে জুলাই: 'ভুয়ো ভিডিও' পোস্ট করার পর ডিলিট! তদন্ত রিপোর্ট কোথায়? তৃণমূলকে পাল্টা সুজনের
গ্রাফিক্স - সুমিত্রা নন্দন
Published on

বামফ্রন্ট সরকারের 'অত্যাচার' হিসেবে দেখাতে গিয়ে উলুবেড়িয়ায় বর্তমান শাসক দলের পুলিশি নির্যাতনের একটি ভিডিও প্রচার করার অভিযোগ উঠেছে শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

প্রতি বছরই তৃণমূল ২১ জুলাই শহীদ দিবস পালন করে। ২১ জুলাইয়ের ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়েই বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলে উলুবেড়িয়ায় হওয়া পুলিশি নির্যাতনের একটি ভিডিও সোমবার সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচার করেছে তৃণমূল।

এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যথেষ্ট বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। চাপের মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে নিজেদের পেজ থেকে ভিডিওটি ডিলিট করে ফেলেছে তৃণমূল। যদিও এই ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার।

আগামী ২১ জুলাই কলকাতায় তৃণমূলের সমাবেশ রয়েছে। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই যুব কংগ্রেসের ডাকা সমাবেশে যথেষ্ট অশান্তি এবং বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছিল। উত্তপ্ত হয়েছিল কলকাতা। যদিও সেই সময় মমতা ব্যানার্জী কংগ্রেস দলেই ছিলেন। যুব কংগ্রেসের কর্মীরা মমতা ব্যানার্জীর নেতৃত্বে মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন। সেই ঘটনার বিবরণ দিয়ে ১৯৯৩ সালের ২ আগস্ট আদালতে হলফনামা পেশ করেছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রসচিব মণীশ গুপ্ত। পরে তিনিই আবার তৃণমূল সরকারের বিদ্যৎমন্ত্রী হয়েছিলেন।

হলফনামায় জানানো হয়েছিল যে, সেদিনের জমায়েতে "বহু সশস্ত্র দুষ্কৃতী নেশাগ্রস্ত অবস্থায় জড়ো হয়েছিল।" সেদিন মেয়ো রোডে ১৫ হাজার, ধর্মতলায় ১৫ হাজার, ব্রেবোর্ন রোড, স্ট্র্যান্ড রোডে ১০ হাজার এবং বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রীটে ৭ হাজার যুব কংগ্রেসের কর্মী জমায়েত করেছিল। মহাকরণের দিকে তারা যখন ছুটে যাচ্ছিল তখন পুলিশ তাদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হয়নি।

পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছিল বলেই ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে সেই ১৩ জনের মধ্যে একজনের গায়ে গুলি লাগেনি। তিনি সিরোসিস অব লিভারে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাইপগান থেকে গুলি ছোঁড়া হয়েছিল। সাথে ইঁট, পাথর, সোডার বোতলও ছোঁড়া হয়েছিল। এমনকি বোমাও ছোঁড়া হয়েছিল। বোমার স্প্লিন্টার, পাইপগানের গুলির আঘাতে জখম হয়েছিল ৩৪ জন পুলিশ। ৩ টি বাস পোড়ানো হয়েছিল, সব মিলিয়ে মোট ২১৫ জনেরও বেশি পুলিশ জখম হয়েছিল। এমনকি আক্রান্ত হয়েছিল সাংবাদিকও।

এ প্রসঙ্গে CPI(M) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, "২১ জুলাইয়ের তদন্ত রিপোর্টটা কোথায়? মমতা ব্যানার্জী কী ট্যুইট করেছেন এবং তার পাল্টা সুকান্ত মজুমদার কী ট্যুইট করেছেন সেটা কোনও বড় বিষয় নয়। বাজারে ভাষণবাজি হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক লোক, বামবিরোধী লোক এবং মিডিয়া সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চূড়ান্ত বামফ্রন্ট বিরোধী প্রচার তো চলল। সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রামেও নানা কীর্তি চলেছে। সিবিআই রিপোর্টেও কিছু দাঁড়ায়নি। এখানে তো মুখ্যমন্ত্রী ২১ জুলাই নিয়ে নিজে কমিশন করেছিলেন। যদি আমি ভুল না হই, রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা পড়েছিল ২০১৫-১৬ সালে। ২০১৬ থেকে এই ৬ বছরের মধ্যে রিপোর্টটা প্রকাশ করেননি কেন? এই অপরাধই তো মুখ্যমন্ত্রী করেছেন।"

২১শে জুলাই: 'ভুয়ো ভিডিও' পোস্ট করার পর ডিলিট! তদন্ত রিপোর্ট কোথায়? তৃণমূলকে পাল্টা সুজনের
East West Metro: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কৃতিত্ব কার? তৃণমূল বিজেপির ভূমিকাকে তীব্র কটাক্ষ CPIM-র

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in