ফের ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারালেন রাজ্যের তিন পরিযায়ী শ্রমিক। তালিকায় রয়েছেন মুর্শিদাবাদের একজন, মালদহের একজন এবং কোচবিহারের একজন। মৃতদের পরিবারের অভিযোগ, রাজ্যে কাজ না থাকার কারণে ভিন রাজ্যে কাজ করতে যেতে হয়েছিল।
মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা বছর ৩৩-র মোকলেসুর রহমান দিল্লির সরোজিনী নগরে কাজে গিয়েছিলেন। পেশায় তিনি রাজমিস্ত্রি। সেই কাজ করতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। জানা যাচ্ছে, জল তোলার সময় মোটর চালু করতে গিয়েই বিপত্তি ঘটে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করেও লাভ হয়নি। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। দু'মাস আগেই তিনি দিল্লিতে কাজে যোগ দিয়েছিলেন।
আবার মালদহের আকিদুল শেখ নামের এক শ্রমিকেরও মৃত্যু হয়েছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। তিনি হায়দরাবাদে কাজে গিয়েছিলেন। তিনিও রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ইলেকট্রিক মেশিনে হাত লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি।
ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন কোচবিহারের মালবাড়ির বাসিন্দা রঞ্জিত বর্মণও। বেঙ্গালুরুতে গিয়েছিলেন রাজমিস্ত্রির কাজে। সেখানেই টাইফয়েডে আক্রান্ত হন তিনি। বেশ কিছু দিন হাসপাতালে ভর্তিও ছিলেন। হাসপাতাল থেকে ফিরেই কাজে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে অপারেশনও হয়। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়ই প্রাণ হারান তিনি।
রঞ্জিতের বাবা বলেন, 'ওর জবকার্ড ছিল, কিন্তু গ্রামে কোনোদিন কাজ পায়নি। এখানে কাজ নেই। গ্রামে কাজ পেলে ওর বাইরে যাওয়ার প্রয়োজনই হতো না'।
প্রসঙ্গত, গত মাসেই মিজোরামের সাইরাং এলাকায় ৩৫-৪০ জন শ্রমিক একটি নির্মীয়মাণ ব্রিজের ওপর কাজ করছিলেন। ভূপৃষ্ঠ থেকে যার উচ্চতা ছিল ৩৪০ মিটারেরও বেশি। আচমকাই সেতুটি ভেঙে পড়ে। ঘটনায় ২৬ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। যার মধ্যে ২৩ জনই বাংলার। বেশিরভাগ শ্রমিক মালদহের রতুয়া থেকে গিয়েছিলেন ভিন রাজ্যে কাজ করতে। এই ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, বাংলার এসে চপ ভাজুন। বাংলায় থাকলে প্রাণহানি হতো না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন