দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বারুইপুরে ABPTA আয়োজিত মেধা পরীক্ষা দিতে পারল না ৩৫০-র বেশি পড়ুয়া। বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন ওই পরীক্ষা আয়োজন করায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা পড়ুয়াদের পরীক্ষায় বসতে দেননি বলে অভিযোগ উঠছে। যার প্রতিবাদে রবিবার বারুইপুরে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকরা।
বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (ABPTA) পক্ষ থেকে মেধা অন্বেষণ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। রাজ্যজুড়ে এই পরীক্ষা হয়। মূলত দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। সফল পরীক্ষার্থীদের স্কলারশিপ বা বৃত্তি দেওয়া হয়। রাজ্যের অন্যান্য জায়গার মতো বারুইপুর উত্তরভাগে সত্যানন্দ আশ্রমের পরীক্ষা কেন্দ্রেও রবিবার ৩৫৩ জন পরীক্ষার্থীর জন্য এই পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছিল। যথা সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে যায় পড়ুয়ারা। কিন্তু তারা কেউ পরীক্ষা দিতে পারেনি।
জানা যায় রামনগর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তথা তৃণমূল নেতা সোমনাথ চক্রবর্তীর নিষেধাজ্ঞায় পরীক্ষা বন্ধ করে দেয় আশ্রম কর্তৃপক্ষ। রীতিমতো ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা। গতকাল তাঁরা বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বারুইপুর-ক্যানিং রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এবিপিটিএ-র দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সভাপতি প্রদ্যোতকুমার ঘোষ জানান, জেলার বহু জায়গায় এ দিন এই পরীক্ষা হয়েছে। প্রায় ২১ হাজার পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় সরকারি স্কুলেই পরীক্ষা হয়েছে। তবে বারুইপুর পূর্ব বিধানসভা এলাকায় সরকারি স্কুলে পরীক্ষা নিতে দেওয়া হয়নি। সেই কারণে কমিউনিটি হল ভাড়া করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।
তিনি বলেন, “রবিবার আশ্রম কর্তৃপক্ষ আমাদের জানান, পঞ্চায়েত প্রধান পরীক্ষা নিতে নিষেধ করেছেন। সেই কারণেই পরীক্ষা নেওয়া হবে না। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হল। এত পড়ুয়াদের হয়রান হতে হল।”
যদিও ওই তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান অভিযোগ করেন, "দরিদ্র পড়ুয়াদের থেকে ৯০-১০০ টাকা করে পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে। প্রথমে সকলে ভেবেছিলেন এটা সরকারি পরীক্ষা। কিন্তু পরে জানা যায় এক সংগঠন পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। আমি পুরো বিষয়টা আশ্রম কর্তৃপক্ষকে জানাই। তারপরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়"।
নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে পাল্টা জানানো হয়, ৯০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে পরীক্ষার খরচের জন্য। সাথে একটি বইও দেওয়া হয়েছে পড়ুয়াদের। প্রতি বছরই তাই করা হয়। সকলে সদিচ্ছায় দিয়েছে ওই মূল্য। কিন্তু এই কারণে এতজন পড়ুয়াকে পরীক্ষা দিতে না দেওয়া অন্যায়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন